কৃষি আইন নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক চান মমতা
প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের বিক্ষোভে রাজধানী দিল্লি অশান্ত হয়ে ওঠার পর বিতর্কিত তিন কৃষি আইন নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মোদি সরকারের সংশোধিত তিন কৃষি আইন নিয়ে অবিলম্বে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দাবি তুলে মমতার যুক্তি, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একগুঁয়েমি ছেড়ে যত দ্রুত সম্ভব সব বিরোধীদলের সঙ্গে কথা বলা উচিত কেন্দ্রের।’
বিজ্ঞাপন
বিশ্লেষকরা বলছেন, সর্বদলীয়বৈঠক ডাকলে কৃষি আইন নিয়ে বিরোধী শিবিরের যুক্তি সরকারকে চাপে ফেলবে। আবার বৈঠক না ডাকলে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের সুর ধারালো করার সুযোগ পাবেন মুখ্যমন্ত্রী।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ভোটের আগে কৃষি আইন নিয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে মমতার এমন কৌশলকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
বিজ্ঞাপন
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ভোট আসন্ন। পশ্চিমবঙ্গে প্রথমবার সরকার গড়তে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি। তাই ভোটের আগে মমতার কৌশলকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
বিরোধী দলগুলোর কথায় কর্ণপাত না করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে মানুষের ওপরে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধিতায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বরাবরই সরব।
এটা ইগো বা সংখ্যাগরিষ্ঠতার ব্যাপার নয়। নম্বর রয়েছে বলেই গায়ের জোর দেখানোটা গণতন্ত্রের শর্ত হতে পারে না।
মমতা বন্দোপাধ্যায়
বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রসঙ্গেও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর যুক্তি, ‘এটা ইগো বা সংখ্যাগরিষ্ঠতার ব্যাপার নয়। নম্বর রয়েছে বলেই গায়ের জোর দেখানোটা গণতন্ত্রের শর্ত হতে পারে না। অন্যদের কথাও শুনতে হবে।
উল্লেখ্য, টানা ৬৫ দিন ধরে দিল্লি সীমানায় লাগাতার আন্দোলন করছেন ভারতের লাখ লাখ। গত মঙ্গলবার ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে রাজধানী দিল্লি রণক্ষেত্রের রূপ নেয়।
কৃষকদের আন্দোলন সমর্থন জানিয়েছে অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সমর্থনও পাচ্ছেন আন্দোলনকারীর। ফলে কেন্দ্রের অবস্থানের পাল্টানোর জোরালো অবস্থান তৈরি হচ্ছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, তিনটি কৃষি আইন সংশোধন করার আগে কৃষকদের সঙ্গে এ নিয়ে কোন আলোচনা করেনি সরকার। কৃষক সংগঠনগুলোকেও কিছু না জানিয়ে সংসদে বিল পাস করিয়ে নেয় সরকার।
একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বিলগুলো বিনা বাধায় সংসদে পাস হয়। এর পর থেকেই কৃষক আন্দোলন ক্রমশ সংগঠিত হয়েছে। কৃষক সংগঠনগুলোর সঙ্গে সরকার একাধিকবার বৈঠক করলেও সমস্যার কোন সুরাহা হয়নি।
মঙ্গলবার কৃষকরা পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে দিল্লিতে ঢুকে পড়ে। লালকেল্লায় অবস্থান নিয়ে সেখানে কৃষক সংগঠনের পতাকা টানিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে ভারতের প্রতিটি কোণায় এখন আলোচনা চলছে।
অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। মমতা অবশ্য বলছেন, ওইদিন যে ব্যক্তি লালকেল্লায় পতাকা লাগানোর চেষ্টা করছিলেন, তাকে অতীতে কয়েক জন বড় মাপের বিজেপি নেতার সঙ্গে একাধিকবার দেখা গেছে।
এএস