আয়তনে বিশ্বের সর্ববৃহৎ দেশ রাশিয়ার ২০১৯ সালে যে জনসংখ্যা ছিল, ২০২০ সাল শেষে দেখা যাচ্ছে, দেশটির জনসংখ্যা তার চেয়ে প্রায় অর্ধলক্ষ কম। গত ১৫ বছর পর দেশটিতে এবারই প্রথম জনসংখ্যা কমলো।

শুক্রবার দেশটির পরিসংখ্যান দফতর থেকে প্রকাশিত জনসংখ্যার নতুন এক হিসাব প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্বের আরও অন্যান্য দেশের মতো রাশিয়াতেও যে জনসংখ্যা কমতে শুরু করেছে, তা জানা গেল।  

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরে ২ লাখ ২৯ হাজার ৭০০ বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দেশে। অতিরিক্ত মৃত্যুর হার ১৩ শতাংশেরও বেশি।

পরিসংখ্যান দফতরের বরাতে রাশিয়ার স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বর্তমানে রাশিয়ার মোট জনসংখ্যা ১৪ কোটি ৬২ লাখ। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, মহামারি করোনার কারণে দেশটিতে মানুষ কমেছে। 

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে ২ লাখ ২৯ হাজার ৭০০ বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দেশে। অতিরিক্ত মৃত্যুর হার ১৩ শতাংশেরও বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর আরও কারণ হল বিদেশে কম বয়সী, সুশিক্ষিত লোকের অভিবাসন এবং নিম্ন জন্মহার।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দীর্ঘদিন ধরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির দিকে আরও বেশি জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। তিনি গত বছর এমন প্রবণতার জন্য নিম্ন আয়ের বিষয়টিকে দায়ী করেছিলেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর আরও কারণ হল বিদেশে কম বয়সী, সুশিক্ষিত লোকের অভিবাসন এবং নিম্ন জন্মহার।

অনেক দেশে জনসংখ্যা কমছে

চলতি মাসেই পোল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের প্রকাশিত পরিসংখ্যানেও একই ধরনের প্রবণতা দেখা গেছে। অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে জন্মহার বাড়াতে নানা ধরনের প্রণোদনার ব্যবস্থা করে আসছে জাপান সরকার। 

গত মঙ্গলবার সরকারিভাবে প্রকাশিত ২০২০ সালের পরিসংখ্যান দেখা যাচ্ছে, পোল্যান্ডে যেভাবে মৃত্যুহার বাড়ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশটিতে এমনটা দেখা যায়নি। অপরদিকে সেখানে জন্মহার হ্রাস পেয়েছে।

মহামারিকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও অনেকে একে জনসংখ্যার সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

গত ডিসেম্বর পোল্যান্ডের পরিসংখ্যান দপ্তরের প্রকাশিত হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সালের প্রথম ১১ মাসে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বোচ্চ। একই সময়ে জন্মহার ছিল ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। 

২০১৯ সালে গড়ে প্রতি মাসে পোল্যান্ডে ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু করোনার প্রকোপ শুরুর পর গত বছরের নভেম্বরেই দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা ৬০ হাজার ৪০০ জন প্রায়।  
এদিকে যুক্তরাজ্যে গত ১৪ জানুয়ারি প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গত বছর দেশটিতে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। সেখানেও মহামারির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। 

এএস