প্রায় তিন দশকের গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত আফগানিস্তানে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দেশটির সকল জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে ইরান। রাজধানী তেহরানে আফগান তালেবানের শীর্ষ নেতা মোল্লা আব্দুল গনি বারাদারের সঙ্গে এক বৈঠকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ এই প্রস্তাব করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দেশটির আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সি।

গত কয়েক দশক ধরে শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত ইরান এবং আফগানিস্তানের কট্টর সুন্নিপন্থী তালেবান গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা থাকলেও কয়েকবছর আগে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহার শুরু করার পর থেকে ইরানের সাথে ঘনিষ্টতা শুরু হয় তালেবানের।

গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে কাতারে শুরু হওয়া আফগানিস্তান এবং তালেবান গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি সংলাপের অন্যতম আয়োজক দেশও ইরান।

গত সপ্তাহে ইরান সরকারের আমন্ত্রণে মোল্লা আব্দুল গনির নেতৃত্বাধীন আফগান তালেবান গোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধি দল ইরান সফরে রয়েছে। এরপর ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান আলি শাখানির উপস্থিতিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয় তালেবান প্রতিনিধি দলের।

বৈঠকে জারিফ বলেন, ‘শূন্যতার ওপর কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত আসতে পারে না। আফগানিস্তানে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় দেশটির রাষ্ট্রকাঠামো, আইন ও সংবিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করে দেশের সব জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারে, এমন একটি সরকার গঠনের কোনও বিকল্প বর্তমান সময়ে নেই।’

চলতি বছর মে মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা থাকলেও দেশটিতে সম্প্রতি হামলা ও হত্যা বেড়ে যাওয়ায় মে মাসের পরও সেখানে সেনা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ন্যাটো।

ইরানের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে আফগান প্রতিনিধি দলের প্রতিক্রিয়া জানা না গেলেও আফগানিস্তান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যত দ্রুত তাদের সেনা সদস্য প্রত্যাহার করে নেবে, ততই দেশটির জন্য মঙ্গল – এ বিষয়ে ইরান সরকার এবং আফগান প্রতিনিধিদের মধ্যে ঐক্যমত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান সরকারের সূত্র।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ ব্যাপারে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেননি। কিন্তু বিশ্লেষকদের অনুমান, পূর্বসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্পের পথ অনুসরণ না করে তিনিও এ বিষয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করবেন।

সূত্র: জেরুজালেম পোস্ট, মিডলইস্ট মনিটর।

এসএমডব্লিউ