অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে বার্মিজ কূটনীতিকের পদত্যাগ
মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে মিয়ানমার দূতাবাসের এক কূটনীতিক পদত্যাগ করেছেন। বার্মিজ ওই কূটনীতিকের নাম ইউ মাউং মাউং লাত। তিনি ওয়াশিংটনে মিয়ানমার দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েজ অব আমেরিকাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি পদত্যাগের কথা জানান।
ভয়েস অফ আমেরিকার বার্মিজ সার্ভিসকে তিনি বলেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ আমি সামরিক বাহিনীর অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল করাকে গ্রহণ করতে পারি না। এটা সম্পূর্ণ ভাবে অন্যায় ও অবিচার, আমি (সামরিক শাসকদের সহযোগী হয়ে) থাকতে পারি না। বিশেষ করে মিয়ানমারের তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যত নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।’
বিজ্ঞাপন
নিজের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন বলে জানিয়ে ইউ মাউং আরও বলেন, মিয়ানমারের দূতাবাসগুলোকে দেওয়া সর্বশেষ নির্দেশনার বিষয়ে তিনি জানেন না। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন যেহেতু মানবাধিকারকে অগ্রাধিকার দেয়, তাই তিনি আশা করছেন যে, ওয়াশিংটন তাকে আশ্রয় দেবেন।
তার মতে, বিশ্বজুড়ে মিয়ানমারের কূটনীতিকদের মধ্যে এমন অনেকে আছেন, যারা অভ্যুত্থানকে স্বাগত জানান। তবে বিপরীত অবস্থানে থাকা কূটনীতিকও রয়েছেন। আর তাই অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসহযোগিতামূলক আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান ইউ মাউং। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখল মিয়ানমারের মারাত্মক ক্ষতি এবং অভাবনীয় বিপর্যয় ঘটাবে।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া উচ্চপদস্থ বেসামরিক কর্মকর্তাদের পদে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের বসানো হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে সামরিক অভ্যুত্থান করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপর স্টেট কাউন্সিলার অং সান সু চি’র সরকারকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, অং সান সু চিসহ আটক করা হয় অনেক শীর্ষ নেতাকে।
এছাড়া একযোগে ২৪ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকেও অপসারণ করে অভ্যুত্থানকারীরা। গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি)।
বিবিসি বলছে, সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে মঙ্গলবার রাতে ইয়াঙ্গুনের প্রতিটি সড়কের বাসিন্দারা তাদের ঘর থেকেই হাড়ি-কড়াই ও বাসনে শব্দ করতে থাকেন এবং অনেকে রাস্তা থেকে গাড়ির হর্ন বাজিয়ে সেই প্রতিবাদে শামিল হন।
এছাড়া বিভিন্ন যুব ও ছাত্র সংগঠন সামরিক বাহিনীর কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। এ বিষয়ে ফেসবুকে প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং তাদের এই প্রচারণায় এক লাখেরও বেশি মানুষ ‘লাইক’ দিয়েছেন।
সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা
টিএম