মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মিয়ানমারের জেনারেলদের ‘ক্ষমতা ছাড়ার’ আহ্বান জানিয়ে সোমবারের অভ্যুত্থানে আটক বেসামরিক নেতাদের মুক্তি দেওয়ার দাবি তুলেছেন। এদিকে তার প্রশাসন জানিয়েছে, মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করছে তারা। 

মিয়ানমারে সোমবারের অভ্যুত্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে নিন্দা জানাচ্ছে, তার নেতৃত্ব দিচ্ছে ওয়াশিংটন। সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চিসহ দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেতাদের আটক করা হয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষের দেশ মিয়ানমারে আবারও দশকের পর দশক সেনা শাসনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।   

জেনারেলদের ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে বাইডেন বলেন, ‘গণতন্ত্রে জোর করে কখনো জনগণের ইচ্ছা বা বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের ফলাফলকে লঙ্ঘনের চেষ্টা করা উচিত নয়।’

প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবার তার পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে বাইডেন বলেন, ‘এতে কোনও সন্দেহ নেই যে; গণতন্ত্রে জোর করে কখনোই জনগণের ইচ্ছা বা বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের ফলাফলকে লঙ্ঘনের চেষ্টা করা উচিত নয়।’

জো বাইডেন মিয়ানমারের অভ্যুত্থান নিয়ে আরও বলেন, ‘বার্মিজ সামরিক বাহিনী যে ক্ষমতা দখল করেছে তা তাদের ছেড়ে দেওয়ার সঙ্গে আটক সরকারি কর্মকর্তা, সমর্থক ও অ্যাক্টিভিস্টদের মুক্তি দিতে হবে। টেলিযোগাযোগে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করতে হবে এবং সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে হবে তাদের।’

সু চির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা করে তাকে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

বাইডেন এমন কথা বলার কয়েক ঘণ্টা আগে তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেন, হোয়াইট হাউস ‘সামরিক বাহিনীর ক্ষমতাকে পোক্ত করে এমন সামরিক ব্যক্তি ও সেনা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রার নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করছে।’ তিনি আর বিস্তারিত কিছু জানাননি।

অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে এক হয়ে এর প্রতিবাদ করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করছে মিয়ানমারের মানুষজন। কিন্তু মিয়ানমারের জেনারেলরা বৃহস্পতিবার ফেসবুকে প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধ করার জন্য ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেয়। এরপরই ওয়াশিংটন থেকে এমন সতর্কবার্তা আসলো। 

মিয়ানমারের জনরোষ দমনে সামরিক জান্তা সরকার ইন্টারনেটে ব্যাঘাত তৈরির চেষ্টা করছে। ফেসবুক ছাড়াও ফেসবুকের মালিকানাধীন ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ সেবাও এখন দেশটিতে বিঘ্নিত। 

নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে মিয়ানমারে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির নেত্রী সু চি এবং প্রেসিডেন্ট উয়িন মিন্টসহ আইনপ্রণেতাদের আটক করা হয়েছে।

সূত্র : বার্তা সংস্থা এএফপি

এএস