প্রকল্পের আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি সমান, সন্দেহ কমিটির
সংসদে অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়েছে আজ/ ছবি: সংগৃহীত
প্রকল্পের বাস্তব ও আর্থিক অগ্রগতি সমান হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছে এ সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি। কমিটির কাছে বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। সংশ্লিষ্ট বিভাগের জবাবদিহিতার অভাবে এটা হয়েছে বলে মনে করছে কমিটি।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১২তম বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার চলমান ৫১টি, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি এবং মাস র্যাপিড ট্রানজিট অথরিটির তিনটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়।
বিজ্ঞাপন
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ৫১টি প্রকল্পের কাজের অগ্রগতির প্রতিবেদন বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার নৌ-বন্দর স্থাপন প্রকল্পে আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি ৫১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটি চলতি বছর ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। একইভাবে বাল্লা স্থলবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি ১৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ; বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেকটিভিটি প্রজেক্ট-১ শেওলা, ভোমরা ও রামগড় স্থলবন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
এছাড়া ৩৫টি ড্রেজার ও সহায়ক জলযানসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি সংগ্রহ প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি এক দশমিক ২৬ শতাংশ, বাস্তব অগ্রগতি এক দশমিক ৩২ শতাংশ। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জন্য দুটি মিডিয়াম ফেরি নির্মাণ প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৫৭ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ ও বাস্তব অগ্রগতি ৫৮ শতাংশ। আগামী জুনে এ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা। ধামুকা-কামালপুর স্থলবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ ও বাস্তব অগ্রগতি ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি মো. আব্দুস শহীদ বলেন, প্রকল্পের আর্থিক আর বাস্তব অগ্রগতি একই হওয়ার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়। এটি কোনোভাবেই যৌক্তিক মনে হয়নি আমাদের কাছে। মনে হয়েছে, তথ্য দেওয়ার খাতিরে তারা তথ্য দিয়েছে। আমাদের কাছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের জবাবদিহিতা খুবই দুর্বল মনে হয়েছে।
তিনি জানান, যেসব প্রকল্পের আর্থিক এবং ভৌত অগ্রগতি সমান আগামী দুই মাসের মধ্যে সেগুলোর বিষয়ে কমিটি একটি সার্বিক প্রতিবেদন দিতে বলেছে।
সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে কমিটি পদ্মা সেতুর বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মোংলা বন্দরের কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম অব্যাহত রেখে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া আরও গতিশীল করার সুপারিশ করেছে।
এছাড়া বৈঠকে বিআইডব্লিউটিএ নির্মিত জাহাজের মেয়াদ ও আয়-ব্যয়ের হিসাব সম্পর্কিত প্রতিবেদন পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একই প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন অঞ্চলে কাজ দেওয়ার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়। পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মেট্রোরেলের কার্যক্রমকে দ্রুত শেষ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আব্দুস শহীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেন- কমিটির সদস্য চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, এ বি তাজুল ইসলাম, ফজলে হোসেন বাদশা, আহসান আদেলুর রহমান এবং খাদিজাতুল আনোয়ার।
এইউএ/এসএসএইচ/এফআর