‘কাদের মির্জার বক্তব্যের বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা হবে’
ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভায় মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা বিভিন্ন সময় যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা দলীয় ফোরামে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
মন্ত্রী বলেন, ‘আব্দুল কাদের মির্জা নির্বাচনের আগে যে বক্তব্যগুলো দিয়েছেন, আমাদের দলের অনেকেই আগে এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। স্থানীয় সংগঠন নিয়ে যে প্রশ্নগুলো তিনি তুলেছেন, সে অধিকার সবারই আছে। তিনি সেই অধিকার বলেই প্রশ্নগুলো তুলেছেন, এগুলো অবশ্যই দলীয় ফোরামে আলোচনা হবে, এর সত্যতা কতটুকু।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তাকে (আব্দুল কাদের মির্জা) নিয়ে তো গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দেখা গেছে আব্দুল কাদের মির্জা বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। তার দুইজন মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি এবং জামায়াতের প্রার্থীর সম্মিলিত ভোটের চেয়েও তিনি তিনগুণ ভোট পেয়েছেন। এজন্য তিনি অবশ্যই অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে আল-কায়েদার উপস্থিতি আছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে আল-কায়েদার কোনো উপস্থিতি নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অজ্ঞতাপ্রসূত যখন এই বক্তব্য রাখেন, সেটি খুবই দুঃখজনক। সরকারের পক্ষ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
‘আমি মনে করি আজকের বাস্তবতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে সহিংসতা দেখা দিয়েছে, পার্লামেন্টে হামলা চালিয়ে সেখানে কয়েকজন নিহত হয়েছেন। আমাদের দেশে কিংবা ভারতে বা আশেপাশের কোনো দেশে এভাবে পার্লামেন্টে যখন অধিবেশন চলছে, তখন কি হামলা হয়েছে? হয়নি। এবং এই আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে যেদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যখন শপথ গ্রহণ করবেন, এফবিআই তথ্য দিয়েছে, সেদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতা ছড়াতে পারে, বিক্ষোভ হতে পারে। যেকোনো দেশে সন্ত্রাসবাদ দমন আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব এবং লক্ষ্য। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি মনে করি তাদের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস দমনে বেশি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন, বলেন ড. হাছান মাহমুদ।
আমেরিকার চেয়ে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভাল, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আমাদের দেশে কিংবা ভারতে সংসদে অধিবেশন চলার সময় উত্তেজিত জনতা কি ইতিহাসে কখনো এভাবে হামলা চালিয়েছে? যেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে। সেই বিবেচনায় তো আমাদের সংসদে এ ধরনের কোনো হামলা হয়নি। এই বিবেচনা থেকে যে উপসংহার আসে সেটি কি বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস এবং বর্ণবাদ, এই দুইটি বিষয়ে আরও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।
দুইদিন আগে বিএনপি এবং জামায়াতপন্থী কিছু নেতা রাজধানীর একটি হোটেলে দোয়া মাহফিলের আযোজন করেছিল, তাদের মূল দাবি ছিল সরকারকে পতন ঘটিয়ে নির্বাচন, এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে তিনি বলেন, আমরা সবসময় বলে আসছি বিএনপি জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এবং বাংলাদেশে আরও কিছু শক্তি ও গোষ্ঠী আছে যারা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। শেষ পর্যন্ত দেখতে পেলাম দোয়া মাহফিলকেও ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে নেওয়া হচ্ছে। দোয়া মাহফিলকে বেছে নেওয়া হয়েছে ষড়যন্ত্র করার একটি উপলক্ষ হিসাবে, যেটি আসলে খুবই দুঃখজনক।
এই ধরনের ষড়যন্ত্র তারা আগেও করেছে দাবি করে সরকারের এ মন্ত্রী বলেন, এগুলো করে কোনো লাভ হবে না।
হবিগঞ্জের মাধবপুরে নৌকার প্রার্থী এজেন্ট দিতে পারেননি, সেখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে, আপনাদের প্রার্থিতা শতভাগ সঠিক ছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, হবিগঞ্জের মাধবপুর নিয়ে আমার স্পেসিফিক ধারণা নেই, খবর নিয়ে বলতে হবে। সেখানে নিশ্চয়ই অন্য প্রার্থীদের পক্ষে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতারা কাজ করেছেন, কেন করেছে সেটি নিশ্চয়ই অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএইচআর/জেডএস