আসাদের রক্তভেজা শার্টের ইতিহাস জানেন না অনেকেই
নরসিংদী জেলার শিবপুরে আসাদের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি
বুধবার, ২০ জানুয়ারি, শহীদ আসাদ দিবস। ১৯৬৯ সালের এই দিনে পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খান সরকারের বিরুদ্ধে দেশের ছাত্রসমাজের ১১ দফা কর্মসূচির মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে জীবন দেন ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান। এরপরই সকল শ্রেণিপেশার মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। আসাদের রক্তভেজা শার্ট নিয়ে মিছিল করে। বিস্ফোরিত হয় গণঅভ্যুত্থানের। একপর্যায়ে আইয়ুব খানের পতন হয়।
শহীদ আসাদের পুরো নাম মোহাম্মদ আমানুল্লাহ আসাদুজ্জামান। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের এই নেতা ১৯৪২ সালের ১০ জুন নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার ধানুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালের জানুয়ারির ২০ তারিখ ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন আসাদ। পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
দিবসটি উপলক্ষে শহীদ আসাদের গ্রামের বাড়ি ধনুয়ায় বুধবার (২০ জানুয়ারি) সকালে সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। এর পরই শিবপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শহীদ মিনারে আলোচনা সভা করে তারা।
এ সময় বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির জাতীয় কমিটির সদস্য আমেনা আক্তার, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের আহ্বায়ক নাজমুল আলম সোহাগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সদস্য সুমন আজাদ, শহীদ আসাদ দিবস পালন পরিষদ নরসিংদীর বুলবুল আহমেদ প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
বক্তব্যে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের আহ্বায়ক নাজমুল আলম সোহাগ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম চাবি হল ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান। আর গণঅভ্যুত্থানের নায়ক শহীদ আসাদ। আজকের এই দিনে আসাদের প্রতি রইল শ্রদ্ধা।
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির জাতীয় কমিটির সদস্য আমেনা আক্তার বলেন, পাঠ্যপুস্তক থেকে শুরু করে ভালোভাবে কোথাও আসাদকে জানার সুযোগ নেই। নতুন প্রজন্মের কাছে আসাদকে পৌঁছে দিতে পাঠ্যপুস্তকে আসাদকে অন্তর্ভুক্তকরণের বিকল্প নেই।
স্কুলশিক্ষার্থী রকিব হাসান বলেন, আসাদ নরসিংদীর সন্তান। অথচ আমরা অনেক শিক্ষার্থীই জানি না আসাদ সম্পর্কে। আমাদের পাঠ্যপুস্তকে তেমন প্রবন্ধ নেই, যার মাধ্যমে আমরা জানতে পারব।
শহীদ আসাদ দিবস পালন পরিষদ নরসিংদী শাখার আহ্বায়ক বুলবুল আহমেদ বলেন, নরসিংদীতে আসাদের নামে ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ নেই। নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, পাঠাগার প্রতিষ্ঠা এবং সরকারি উদ্যোগের বিকল্প নেই।
এমএসআর