চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীকে এনে বিক্রি করে দেওয়া হয় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া যৌন পল্লীতে। সেখানে অনিচ্ছা সত্ত্বেও জোরপূর্বক অনৈতিক কাজ করানো হচ্ছিল তাকে দিয়ে। অন্যথায় শিকার হতে হতো মারধরের।

নির্মম এ নির্যাতন থেকে বাঁচতে কল দেন জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’-এ। তার ফোন পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে পল্লীতে থাকা ১৪ তরুণীকে উদ্ধার করেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) রাতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ এক তরুণী দৌলতদিয়া থেকে ফোন করে তাকে উদ্ধার করার আকুতি জানান।

তরুণী জানান, তার বাড়ি জামালপুরের তেঁতুলিয়া। ৯ মাস আগে তার ভাবি চাকরির প্রলোভনে তাকে দৌলতদিয়া যৌন পল্লীতে নিয়ে এসে বিক্রি করে দেন। সেখানে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজ করানো হচ্ছিল, রাজি না হলে তাকে মারধর করা হতো।

ওই তরুণী আরও জানান, সে বর্তমানে অসুস্থ, পল্লীর বন্দী অবস্থা থেকে সে মুক্তি পেতে চান। তার কাছে কোনো ফোন নেই। এক সহৃদয় ব্যক্তির ফোন থেকে সে ৯৯৯ এ ফোন করেন। এই অবস্থা থেকে তাকে উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

জাতীয় জরুরি সেবার পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) আনোয়ার সাত্তার ঢাকা পোস্ট-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে কলারের সঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ডিউটি অফিসারের কথা বলিয়ে দেন। সংবাদ পেয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়।

পরে গোয়ালন্দ ঘাট থানার থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল তায়েবী ৯৯৯-কে ফোনে জানান, তারা অনেক খোঁজাখুঁজি করে ভুক্তভোগী মেয়েটিকে উদ্ধার করেন এবং তার বর্ণনা অনুযায়ী একটি তালাবদ্ধ ঘর থেকে আরও ১৩ তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। ওসি ৯৯৯-কে জানান সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়, মুক্তির আনন্দে উদ্ধার হওয়া তরুণীরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

তারা পুলিশকে জানায়, তাদেরকে অন্ধকার ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হতো, ৫/৬ দিন পর পর গোসলের সুযোগ পাওয়া যেত। উদ্ধার তরুণীদের থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে এবং পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতের মাধ্যমে উদ্ধারকৃত তরুণীদের সেফ হোমে এবং তাদের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানা গেছে।

এআর/এফআর