দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট হাজার ৫৫ জনে।

এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৫১৫ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৩২ হাজার ৯১৬ জনে।

মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, নতুন করে ভাইরাসটি থেকে মুক্ত হয়েছেন ৪৪৭ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন চার লাখ ৭৭ হাজার ৪২৬ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৬৯৬টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৪০১টি। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৫ লাখ ৮৪ হাজার ৭৮৮টি।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৮ লাখ ৬ হাজার ৮৭১টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় করা হয়েছে সাত লাখ ৭৭ হাজার ৯১৭টি।

মারা যাওয়াদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ এবং দুই জন নারী। তারা সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। এর মধ‌্যে ঢাকার আট জন, চট্টগ্রামের চার জন, খুলনা ও ময়মনসিংহের এক জন করে দুই জন।

মারা যাওয়াদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি ১০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের দুই জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের এক জন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের এক জন রয়েছেন।

প্রথম টিকা নেবেন রুনু বেরুনিকা কস্তা
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে বুধবার (২৭ জানুয়ারি)। রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন। এদিন দেশের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে করোনার টিকা নেবেন সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা। তিনি কুর্মিটোলা হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুর্মিটোলা হাসপাতালের এক নার্স জানান, বুধবার প্রথমে ৩ জন নার্সকে টিকা দেওয়া হবে। একইসঙ্গে এদিন আরও ৩ জন চিকিৎসককেও টিকা দেওয়া হবে। প্রথমে টিকা নেবেন ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা। তার পরে টিকা নেবেন ফিমেল মেডিসিন ইউনিটের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স মুন্নি খাতুন ও একই ইউনিটে নার্স রিনা সরকার।

সারাদেশে ৮ ফেব্রুয়ারি টিকা দেওয়া শুরু
২৭ জানুয়ারি ঢাকায় টিকা প্রয়োগ শুরু হলেও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসহ নানা বিষয় পর্যবেক্ষণ করে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে সারাদেশে একযোগে টিকাদান। সংক্রমণের হার ও জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় সারাদেশের কোন জেলায় কত সংখ্যক ভ্যাকসিন যাবে তা নির্দিষ্ট করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারা জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে সারাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেছেন, ৫০ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ দেওয়া হবে।

জানা গেছে, দেশের ৬৪ জেলাতেই প্রথম ধাপে পর্যায়ক্রমে টিকা দেওয়া হবে। তবে ঢাকা জেলার জন্য রাখা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এ জেলায় বরাদ্দ রয়েছে ১২ লাখ ৫৪ হাজার ২০০ ডোজ। সবচেয়ে কম বরাদ্দ বান্দরবন জেলায়। জেলাটিতে ৪০ হাজার ৪৩৯ ডোজ টিকা দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডিস্ট্রিবিউশন প্ল্যানে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে টিকা দেওয়া হবে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪৫ জনকে। চট্টগ্রাম বিভাগে দেওয়া হবে ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৩ জনকে, রাজশাহী বিভাগে ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৯২২ জনকে, রংপুর বিভাগে ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৯ জনকে, খুলনা বিভাগে দেওয়া হবে ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪৬ জনকে, সিলেট বিভাগে দেওয়া হবে ১০ লাখ ৩২ হাজার জনকে এবং বরিশাল বিভাগে আট লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৪ জনকে টিকা দেওয়া হবে। তিন রাউন্ডে এ জনগোষ্ঠী টিকা পাবেন।

জেডএস