তৃতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধনকালে

কলকাতায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব দুই বাংলার নৈকট্য বাড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, চলচ্চিত্র মানুষের গভীর অনুভূতিকে স্পর্শ করে। চলচ্চিত্র মনে স্থায়ী ছাপ ফেলে। চলচ্চিত্র তাই মানুষে-মানুষে যোগাযোগ গড়ে তুলতে অনন্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম। 

শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তৃতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বাৎসরিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হলো আজ। কলকাতার রবীন্দ্রসদনের নন্দন-১ হলে উৎসব চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। 

পশ্চিমবঙ্গের বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও জৈবপ্রযুক্তি মন্ত্রী ও বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব ব্রাত্য বসু এবং ভারতের বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সম্মানীয় অতিথি, ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান ও চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ বিশেষ অতিথি হিসেবে এ সময় উপস্থিত ছিলেন। কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রথম সচিব প্রেস ড. মো. মোফাকখারুল ইকবাল। 

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে চলচ্চিত্র শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যৌথভাবে ভারত-বাংলাদেশের চলচ্চিত্র তৈরির কাজ হচ্ছে, যা আগে ছিল না। আমাদের আসল পরিচয় আমারা বাঙালি, তাই সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বাড়াতে হবে। এর ফলে দুই বাংলার নৈকট্য স্থাপন হবে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু  বলেন, সমাজে উন্নয়নের জন্য শিল্প ও সাহিত্যের সাথে রাজনীতি আনা ঠিক নয়। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ তথা সারা বিশ্বে এক অনন্য সম্পদ বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান।  

এবছরকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর এবং ভারত বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কেরও পঞ্চাশ বছর হিসেবে বর্ণনা করে ভারতের বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ছিন্ন হবার নয়।

তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাইমুম সারোয়ার কমল, বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, অভিনেত্রী জয়া আহসানসহ অনেকে এ সময় উপস্থিত ছিলেন। উৎসবে ৩২টি চলচ্চিত্রের মধ্যে উদ্বোধনী সন্ধ্যায় প্রদর্শিত হয় ‘হাসিনা : আ ডটারস টেল’।

শনিবার বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ‘ব্রিগেড গ্রাউন্ডে’ যাচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী
এদিকে শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে যাচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। সেখানে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ভাষণের ৪৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে মন্ত্রী ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে যাচ্ছেন। 

১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রায় দশ লাখ মানুষের সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণে ছিল স্বাধীনতার আনন্দ, স্বজন হারানোর বেদনা, ভারতের প্রতি অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা ও চিরঞ্জীব সম্প্রীতি আর স্বাধীনতাবিরোধীদের সমালোচনা। 

এ বছর মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে তথ্য মন্ত্রণালয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনকে সাথে নিয়ে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে ৬ ফেব্রুয়ারি স্মরণে সভা আয়োজন করেছে। এতে প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রীর সাথে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দিচ্ছেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননাপ্রাপ্ত ভারতীয় গুণীজনদের সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে।  

এদিকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে কলকাতার অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে ৬০টি চিত্রকর্মের প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বাংলাদেশের চিত্রশিল্পীদের মধ্যে কিরীটি রঞ্জন বিশ্বাস ও জাকির হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘‌‌ব‌ঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শিরোনামে আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে দুদেশের ২৬ জন চিত্রশিল্পীর চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র অধিশাখার যুগ্ম সচিব নজরুল ইসলাম, উপসচিব সাইফুল ইসলামসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তারা কলকাতায় তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন।

পিএসডি/এইচকে