ছবি : সংগৃহীত

এক.

রাশিয়ার সৈন্যরা অবশেষে পূর্ব ইউক্রেনে বিভিন্ন অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে। গত কয়েক মাস ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে যে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে, এখন সেই ধোঁয়ার সঙ্গে আগুনের লেলিহান শিখা যোগ হয়েছে। ইউক্রেনে রুশ সৈন্যরা প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন। কয়েকটি শহরের পথে পথে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হচ্ছে। পুরো পৃথিবী বুঝতে পারছে, আর একটা ভয়ানক যুদ্ধ সম্ভবত কয়েকটা দিনের অপেক্ষা মাত্র।

ইউক্রেনের পূর্ব এবং দক্ষিণ সীমান্তের কাছে রাশিয়া এক লক্ষেরও বেশি সৈন্য ও বিপুল অস্ত্রসম্ভার মজুত করেছে বলে খবর আসছিল গত দু’মাস ধরে। সাম্প্রতিক অতীতে রাশিয়ার সামরিক শক্তিমত্তার এত ব্যাপক প্রদর্শন দেখেনি বিশ্ব। ফলশ্রুতিতে বিশ্বজুড়ে এই আশঙ্কা আগেই তৈরি হয়েছিল যে, ইউরোপ সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। সেই আশঙ্কা নিষ্ফল হয়নি। এখন সত্যি হওয়ার মুখে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণ বোঝা দুরূহ নয়, দীর্ঘদিন ধরেই এর পটভূমি তৈরি হয়েছে। তা বুঝতে গেলে গত নয় বছরের ঘটনাপ্রবাহের উপর দৃষ্টি রাখাটা জরুরি। গত নয় বছর ধরে এই সংঘাতের চিত্রনাট্য আস্তে আস্তে রচিত হয়েছে। রচনা করেছেন অনেকে মিলে। চিত্রনাট্য রচনা এখন সম্পূর্ণ। ‘শুটিং’-ফ্লোরে পৌঁছে গেছেন পাত্র-পাত্রীরা। এরপর সম্ভবত শুধুই ‘অ্যাকশন’।

ইউক্রেনের ওপরে রাশিয়ার পুরোপুরি কর্তৃত্ব স্থাপন এখন সময়ের ব্যাপার। তার অর্থ এই নয় যে, ইউক্রেনে শান্তি আসবে। বরং পরিস্থিতি আরও বেশি জটিল হবে। মানবিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় ইতিমধ্যে ঘটতে শুরু করেছে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এখানে একটি গৃহযুদ্ধেরই সূচনা হলো।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ পুতিন এবং তার সহযোগীদের ওপরে, রাশিয়ার ওপরে আরও কিছু কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আরও কিছু পদক্ষেপ অত্যাসন্ন। এগুলোর ফল দীর্ঘমেয়াদে রাশিয়ার জন্য ভয়াবহ। আবার পুতিনও তার আগ্রাসর প্রক্রিয়া আরও জোরালো করছে। যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ‘পারমানবিক অস্ত্র’ ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছেন তিনি।

এটা যে কেবল ইউক্রেনের সাথে তার লড়াই কিন্তু এখন আর থাকছে না। ক্রমশ পশ্চিমাদের সাথে অর্থনৈতিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন পুতিন। পুতিন সেই পরিস্থিতি বুঝতে পারেন। ফলে তার অভিযান ইউক্রেনেই শেষ হবে, নাকি অন্যান্য দেশেও বিস্তার লাভ করবে—সেটাই ঠিক করে দেবে পুতিন যে যুদ্ধের সূচনা করেছেন তার ভবিষ্যৎ তার হাতে থাকবে কি না। তবে, লাগাম ধরতে না পারলে ছড়িয়ে যাবে এর বিস্তৃতি। কারো কারো আশঙ্কা আরেকটি বিশ্বযুদ্ধে ধাবিত হচ্ছে। অবশ্য এরকম আশঙ্কা এর আগেও অনেক হয়েছে। মানুষের মধ্যে একধরনের যুদ্ধ রোমান্টিকতা আছে।

দুই.

যুদ্ধের কারণ বলা হচ্ছে, ন্যাটো বনাম রাশিয়ার সামরিক আধিপত্য ও সীমানা বিস্তার। কিন্তু ফলাফল যা দাঁড়াচ্ছে—বিশ্বের অর্থনীতিতে অস্থিরতা। কেন রাশিয়া আক্রমণ করল, কেন ইউক্রেন চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে, কেন আমেরিকা বড় বড় কথা বলে এখন পর্যবেক্ষক হয়ে গেল, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কেন প্রতিক্রিয়া প্রকাশ ছাড়া আর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, কত দিন চলবে এই যুদ্ধ এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলবে। কিন্তু এ কথা তো সত্যি যে, যুদ্ধের বলি হবে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ, অস্ত্র বিক্রি বাড়বে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে সন্দেহ, অবিশ্বাস বাড়বে আর সবচেয়ে বাড়বে শ্রমজীবী মানুষের অসহায়ত্ব।

একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সীমানা লঙ্ঘন করে একাধিক এলাকা দিয়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার সৈন্যের প্রবেশ আন্তর্জাতিক আইনের নগ্ন বরখেলাপ—এ বিষয়ে কোনো সংশয়ের অবকাশ নেই। যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে হামলা চালানোর সময় একইভাবে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়েছে।

সিরিয়ায় অভিযানের ব্যাপারে ন্যাটো এবং যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ এ মানদণ্ডে অগ্রহণযোগ্যই শুধু নয়, তা রীতিমতো অপরাধের পর্যায়েই পড়ে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই তা একই আচরণের বৈধতা দেয় না। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই রাশিয়ার এ আগ্রাসনকে দেখতে হবে এবং তা যে আন্তর্জাতিক আইন ও নীতির বিরুদ্ধে, সেটা দৃষ্টিগোচরে আনতে হবে। কিন্তু ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলা ইউক্রেনকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাও। এ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারকে।

ইউক্রেন যখন তার হাতে থাকা সব ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংস করে নন-প্রলিফারেশন অব নিউক্লিয়ার উইপন ট্রিটি বা পারমাণবিক অস্ত্রবিস্তার নিয়ন্ত্রণ চুক্তি স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়, সে সময় একটি স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তাতে স্বাক্ষর করেছিল ইউক্রেন, রাশিয়া, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র। বুদাপেস্টে ৫ ডিসেম্বর ১৯৯৪ সাক্ষর করা এ স্মারকে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল যে তার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করা হবে না।

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুটি এলাকা—ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক যেখানটা রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ২০১৪ সাল থেকে দখল করে আছে, তাদের স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে রাশিয়া এ যুদ্ধের যৌক্তিকতা প্রমাণের চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, রাশিয়া এবং রাশিয়ার পক্ষ হয়ে যারা কথা বলছেন, তারা দাবি করছেন, ১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর থেকে ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণ রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। তাদের দাবি, ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার যে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তা রোধ করার জন্যই এ আগ্রাসন।

প্রথমত, একটি স্বাধীন দেশ কোন জোটে যোগ দেবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সেই দেশের এবং সেই দেশের জনগণের; কোনো বড় প্রতিবেশী দেশ সেটা অপছন্দ করলেই সেই দেশে সামরিক আগ্রাসনের অধিকার রাখে না।

দ্বিতীয়ত, ১৯৯৪ সালের স্মারকে কোথাও বলা হয়নি যে ইউক্রেন চাইলে ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না। তদুপরি রাশিয়া বলছে ন্যাটো চাইছে তাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তার সার্বভৌমত্বের ওপরে আঘাত হানতে, কিন্তু রাশিয়ার এ কথা কতটা বাস্তব?

তিন.

অনেকে এখনো সোভিয়েত যুগে বসবাস করছেন। এখনো তারা সোভিয়েত-ন্যাটো সম্পর্কের ইতিহাস দিয়ে এখনকার রাশিয়া-ন্যাটো দ্বন্দ্ব বুঝতে চাইছেন। মুশকিল হচ্ছে, তারা ভুলে যাচ্ছেন ১৯৯১-এ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর ন্যাটোর সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক বিন্যাসে ১৮০ ডিগ্রি বদল হয়েছে।

১৯৯১ সালেই রাশিয়া ও ন্যাটো একসাথে গঠন করেছিল ‘নর্থ আটলান্টিক কো-অপারেশন কাউন্সিল’। যার নাম হয় ‘ইউরো আটলান্টিক কো-অপারেশন কাউন্সিল’। ২০১৪ অবধি আফগানিস্তানে মার্কিনি হস্তক্ষেপে ব্যবস্থাপনাগত সহায়তাসহ নানা ধরনের সহযোগিতার সম্পর্কেই থেকেছে দু’টি পক্ষ। একটা সময়ে রাশিয়ার ন্যাটোতে যোগদানের প্রস্তাবও এসেছে আলোচনায়। ২০০২ সালে ন্যাটো-রাশিয়া কাউন্সিল গঠন করে ঘোষিত হয়েছিল নানা ধরনের যৌথ কর্মসূচি।

২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করে নেওয়ার পর থেকে দু’পক্ষের সম্পর্কের অবনতি। দু’টি পক্ষের সম্পর্কের উন্নতি ও অবনতির সাথে বিশ্বের শ্রমজীবী জনগণের স্বার্থের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা নিতান্তই রুটি ভাগাভাগির সহযোগিতা ও রুটি কাড়াকাড়ির লড়াই। মার্কিনিরা বড় শত্রু। তার মানে রাশিয়া বন্ধু নয়।

কেউ যুক্তি দিচ্ছেন, ইউক্রেনে ক্ষমতাসীন নয়া উদারবাদীদের উৎখাত করতেই সামরিক অভিযান করেছে রাশিয়া। রাশিয়া রুশ ভাষীদের রক্ষার্থেই অভিযান চালিয়েছে। এসব কু-যুক্তি মানলে ভারতে ভয়ংকর শাসনে অত্যাচারিত মুসলিমদের রক্ষার্থে পাকিস্তান সামরিক অভিযান চালালে তাকেও সমর্থন করতে হবে। কেননা ভারত এখন মার্কিন অক্ষশক্তির শরিক, আর পাকিস্তানের পেছনে আছে চীন। এসব ভুল কথা বলা অবিলম্বে বন্ধ হোক।

চার.

ন্যাটো জোটের ব্যাপারে রাশিয়ার ভীতি ও শঙ্কা যতটা না সামরিক, তারচেয়ে বেশি হচ্ছে দেশের অভ্যন্তরে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক স্বার্থ বিবেচনা। ১৯৯০-এর দশক থেকেই দেখা গেছে, দেশে যত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতাই থাকুক, পশ্চিমা জোটের বিরোধিতা করা বিভিন্ন ধরনের রাজনীতিক শক্তিকে একত্র করে, নাগরিকদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চিন্তাকে শক্তিশালী করে। এটি যখন ক্ষমতায় থেকেছে, তার জন্যই তা লাভজনক হয়েছে।

বরিস ইয়েলৎসিন থেকে পুতিন—সবাই সেই হাতিয়ার ব্যবহার করেছেন। ন্যাটোর সম্প্রসারণ যে রাশিয়াকে এ সুবিধা দেবে, সেটা মার্কিন নীতিনির্ধারকেরা বিবেচনা করেছেন, যে কারণে ১৯৯০-এর দশকের মার্কিন গোপন দলিলগুলোতে দেখা যায় এ ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ার পক্ষেই বেশি মত দেওয়া হয়েছে।

পাঁচ.

রাশিয়া সমাজতান্ত্রিক দেশ নয়। রাশিয়া তৃতীয় বিশ্বের দেশ নয়। আমাদের প্রচলিত ধারণার প্রথম বিশ্বের দেশ না হলেও রাশিয়া একটি মহাশক্তিধর পুঁজিবাদী রাষ্ট্র। ইউক্রেনে ন্যাটো ঘাঁটি গাড়লে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনই হবে। তার মানে ইউক্রেনে রুশ সেনার প্রবেশ মুক্তি সংগ্রাম নয়। আর কোনো মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিতও করবে না। একদিকে সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসন, অন্যদিকে উগ্র রুশ জাতীয়তাবাদী সম্প্রসারণবাদ।

আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত না, এমন মানুষদের নিয়ে আমরা কথা বলছি, যারা চেচনিয়ায় লাখ লাখ মানুষ হত্যা করেছে, সিরিয়ায় হত্যা করেছে হাজার হাজার মানুষ। রুশ বাহিনী সিরিয়ার হাসপাতালেও বোমা নিক্ষেপ করেছে। একদিকে সামরিক জোট, আরেকদিকে সামরিক অভিযান। কে ভালো-কে মন্দ বিবেচনার প্রশ্নই নেই। ‘জনযুদ্ধ’ মার্কা তত্ত্বের কোনো বালাই নেই। অবিলম্বে সামরিক হামলা বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে সমস্ত সামরিক জোট ভেঙে দিতে হবে।

পৃথিবীর সমস্ত দেশের ভূখণ্ড থেকে ভিন্ন রাষ্ট্রের সৈন্যবাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে। দুঃখের বিষয়, সেন্ট পিটার্সবার্গ (পূর্বতন লেনিনগ্রাদ) এ জনগণ যখন যুদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে পথে নেমেছে, তখন রুশ কমিউনিস্ট পার্টি লেনিন মৌসোলিয়ামের সামনে রুশ সরকারের সামরিক অভিযানের স্বপক্ষে অবস্থান বিক্ষোভ করছে। উগ্র জাতীয়তাবাদ একটি ভয়ংকর ব্যাধি, যা রাশিয়া থেকে বাংলা হয়ে আসাম, কাউকেই নিস্তার দেয়নি।

ছয়.

পুতিনের শহরেই যুদ্ধের বিরুদ্ধে মানুষ রাস্তায় নেমেছে। এদিকে এখানে আমাদের জনযুদ্ধ তত্ত্বে মজে এখনো অপরপক্ষে ন্যাটো ও মার্কিনিদের দেখে পুতিনের স্বপক্ষে আন্তর্জাতিক সংহতি গড়ার মোহে আচ্ছন্ন। যুদ্ধের পক্ষে যুক্তি দিচ্ছেন কিছু কিছু সেক্যুলারমনস্ক মানুষ। কেউ কেউ মধ্যপন্থায় লিখছেন যুদ্ধ নয়, ‘সামরিক অভিযান’। হ্যাঁ, ২০১৪ সালে ইউক্রেনে নিও-নাৎসিরা ক্ষমতা দখল করেছিল। তা বলে পুতিন কোথাকার গণতান্ত্রিক! হ্যাঁ, ইউক্রেন ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার মতলব করছে। কিন্তু পুতিন বুঝি ওখানে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চলেছেন!!

যেকোনো প্রতিরোধকেই গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকের স্তালিন যেভাবে দমন করেছিলেন, সেভাবেই দমন করবেন পুতিন। কিন্তু তিনি জানেন না ইউক্রেন কেমন, ইউক্রেনের অধিবাসীদের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই, তিনি ভাবেন যে ইউক্রেনীয়রা যুদ্ধ করতে জানে না। কিন্তু তিনি হয়তো একসময় আবিষ্কার করবেন, তার ধারণা ছিল ভুল। ইউক্রেনে আছে গণতন্ত্র। পুতিনের জন্য সেটা ভয়ের কারণ। ২০১৪ সালে কিয়েভে যা ঘটেছিল, সে রকম ঘটনাই যদি মস্কোয় হয়, তাহলে কী হবে—এটাই পুতিনের ভয়ের কারণ। তিনি এটাকে ব্যক্তিগত হুমকি বলে মনে করেন।

আওয়াজ তুলি, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে ন্যাটো ভেঙে দিয়ে সব দেশ থেকে বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে। ইউক্রেনের জন্য এ মুহূর্তেও উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধ হওয়া এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত তাদের দেশের সীমান্তে শান্তি ফিরিয়ে আনা।

সাত.

সর্বাত্মক যুদ্ধবিরোধী অবস্থান এই সময়ের দাবি। যুদ্ধ কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না। ২০২২ সালে যুদ্ধ, মৃত্যুদণ্ড, ব্যক্তি হত্যা- এর কোনোটিরই কোনো প্রগতিশীল সংস্করণ থাকতে পারে না। আসলে কখনোই থাকার কথা নয়। এমন ভাবাটা ভ্রান্তি ছিল সময় তা প্রমাণ করেছে। প্রতিপক্ষে সাম্রাজ্যবাদ থাকলেই সব সঠিক হয় না। এটা আর ওটার মাঝে সবকিছুতেই একটা সেটা থাকে।

হাবীব ইমন ।। সাংবাদিক