ছবি : সংগৃহীত

যোগী আদিত্যনাথ, অখিলেশ যাদব, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, মায়াবতী— উত্তরপ্রদেশের ভোট কার ভবিষ্যৎ স্থির করবে তার জন্য আরও কিছুদিন অর্থাৎ ৭ মার্চ অবধি অপেক্ষা করতে হবে। তবে গত অক্টোবরে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী— দুই মিলিয়ে সরকারের প্রধান পদে নরেন্দ্র মোদির দু’দশক পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে রাজনাথ সিংহ বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদি আসলে একটা ‘ভাবনা’ বা ‘দর্শন’। নিছক একজন ব্যক্তি হিসেবে তাকে দেখা উচিত নয়। তারমানে এবারেও বিজেপি নরেন্দ্র মোদিকে সাধারণ মানুষ নয় একজন অবতার হিসেবে জনগণের সামনে তুলে ধরবে তা বলাই যায়।

সম্প্রতি ভারতীয় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা নরেন্দ্র মোদি নামক ভাবনার কিছু উপাদান চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন। সবল নেতা, দুর্নীতিমুক্ত, পরিবারের পিছুটানহীন, ফকির, এক রকম সন্ন্যাসী, বিকাশ পুরুষ, হিন্দু হৃদয় সম্রাট প্রভৃতি। এবার কেউ যদি নরেন্দ্র মোদির অনুকরণ করতে চান, তবে তাকে নিজের বায়োডাটায় এসব কথা রাখতেই হবে। ফলে বিভিন্ন রাজ্যের বিজেপি নেতারা এটাই অনুসরণ করার চেষ্টা করে থাকেন এটাই স্বাভাবিক যেমনটা উত্তরপ্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঠিক এমনটাই করছেন।

উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের প্রচারে তিনি নিজেকে কড়া প্রশাসক, বিকাশ পুরুষ এবং হিন্দুত্বের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরছেন। আর তিনি এমনিতেই গেরুয়াধারী সন্ন্যাসী। পরিবারের পিছুটান নেই। করোনা সামলাতে ব্যস্ত বলে পিতার শেষকৃত্যেও যাননি। অখিলেশ যাদবও  সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন যে, ‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার স্বপ্নে এসেছিলেন এবং তাকে বলেছিলেন যে, উত্তরপ্রদেশে পরবর্তী সরকার গঠন করতে চলেছে সমাজবাদী পার্টি।’

ভারতের নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত মোট ৭ দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এবার উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ৩৫ বছরের ব্যবধান ভেঙে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসবেন কি না সেদিকেই সবার নজর থাকবে। কেন্দ্র এবং রাজ্যে একই দল ক্ষমতায় থাকার সম্ভাব্য সুবিধাগুলো ছাড়াও বিজেপি আদিত্যনাথের আমলে শুরু হওয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলো জোর দিয়ে প্রচার করছে। যদিও এটি পশ্চিম ইউপিতে কৃষক বিক্ষোভ, কোভিড মৃত্যু এবং বেকারত্বের কারণে তাদের ক্ষমতার বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, আপনা দল এবং নিশাদ দল নামের ছোট দুটি দল এবারেও এনডিএ জোটের অংশ হিসেবে থাকছে।

বিজেপি আরও শক্তিশালী ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসার লক্ষ্যে প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহসহ তার সিনিয়র নেতাদের মোতায়েন করেছে। অন্যদিকে অখিলেশ যাদবের নেতৃত্বাধীন সমাজবাদী পার্টি (এসপি) এবং মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। অখিলেশ যাদব দাবি করেছেন যে, তার দল এবারে ৪০৩টি আসনের মধ্যে ৪০০টি আসনে জিতে জনগণের সর্বোচ্চ মেন্ডেড নিয়ে ক্ষমতায় আসবে।

যদিও Times Now দ্বারা পরিচালিত একটি প্রাক-নির্বাচন সমীক্ষা বলেছে, ৪০৩ সদস্যের উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় বিজেপি স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। জনমত সমীক্ষা অনুসারে, বিজেপি ২২৭-২৫৪ বিধানসভা আসনে জয়ী হয়ে ইউপিতে ক্ষমতায় ফিরবে বলে মনে হচ্ছে। সমাজবাদী পার্টি এবং তার জোটের অংশীদারদের ১৩৬-১৫১ আসনে জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

Times Now সমীক্ষার মোট উত্তরদাতাদের ৫৩.৪ শতাংশ উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ সবচেয়ে পছন্দের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী। যেখানে ৩১.৫ শতাংশ অখিলেশ যাদবকে রাজ্য শাসন করতে সমর্থন দিয়েছেন, ১১.৫ শতাংশ মনে করেন মায়াবতীই পরবর্তী ইউপি সরকারের প্রধানের জন্য সেরা পছন্দ। উল্লেখযোগ্যভাবে, মাত্র ২.৫ শতাংশ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদ্রাকে চেয়েছেন।

এবারের ভোটে প্রাথমিকভাবে রাজনৈতিক প্রবণতাগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, উত্তরপ্রদেশে সম্ভবত বিজেপি এবং এসপির (সমাজবাদী পার্টি) মধ্যে লড়াই দেখতে পাওয়া যাবে। যেখানে অন্য দুটি বিশিষ্ট রাজনৈতিক দল, মায়াবতীর নেতৃত্বাধীন বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) এবং কংগ্রেস এখনো পর্যন্ত দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে। আগামী কয়েকমাস ধর্ম, বর্ণ, বিকাশ এবং মহামারির মতো বিষয়গুলো অধিক চর্চায়  থাকবে— যা শেষ পর্যন্ত নির্ধারণ করবে যে ক্ষমতার হাওয়াটি কোন দিকে প্রবাহিত হবে এবং সেই হাওয়া কতটা শক্তিশালী হবে।

আমরা যদি ২০১৭ সালের নির্বাচনের দিকে ফিরে তাকাই তাহলে দেখা যাবে, বিজেপি ৪০৩টি আসনের মধ্যে ৩১২টি আসন জিতে ক্ষমতা দখল করেছিল, এটি ইউপি বিধানসভা নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের জন্য সর্বকালের সেরা পারফরম্যান্স। এসপি, যেটি কংগ্রেসের সাথে একটি প্রাক-নির্বাচন জোট তৈরি করেছিল, তারা মাত্র ৪৭টি আসন জিততে সক্ষম হয়েছিল এবং কংগ্রেস স্বতন্ত্রভাবে মাত্র সাতটি আসন পেয়েছিল।

আসলে বিজেপিকে বিভিন্ন ইস্যুতে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির (এসপি) কঠোর বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হয়েছে, যাকে তারা ২০১৭ সালে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল এবং নিজেদের সরকারতন্ত্র শুরু করেছিল। এরমধ্যে সমাজবাদী পার্টি, তাদের অভ্যন্তরীণ যে সমস্যাগুলো ছিল তা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে এবং জয়ন্ত চৌধুরীর রাষ্ট্রীয় লোক দল, কৃষ্ণ প্যাটেলের দল সহ ১৫টি ছোট ছোট দলের সাথে জোটে করতে সক্ষম হয়েছে যাদের মধ্যে আপনা দল, মহান দল এবং ওপি রাজভারের এসবিএসপি দলও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এএপি, তৃণমূল কংগ্রেস, বাম দল, আসাদউদ্দিন ওয়াইসির এআইএমআইএম ইত্যাদির মতো দলগুলো বড়কিছু পাওয়ার আশায় ছোট অংশের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তাদের ভাগ্যে কী জুটবে তাতো ফলাফলের পরেই দেখা যাবে। মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টি এককভাবে লড়ছে।

কংগ্রেস ২০১৭ সালে এসপির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল এবং হতাশাজনক মাত্র সাতটি আসন জিতলেও এবার প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস ‘লাড়কি হুঁ, লাড় শাক্তি হুঁ’ বলে নারীকেন্দ্রিক প্রচারাভিযান শুরু করেছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সম্প্রতি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় বলেছেন যে, তার দল উত্তরপ্রদেশ থেকে শুরু করে দেশে একটি বড় পরিবর্তন আনছে, যেখানে তারা ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হাতে অবিচারের শিকার হওয়া লোকদের ভোটের টিকিট দিয়েছে। প্রাক্তন কংগ্রেস প্রধান রাহুল গান্ধী হিন্দিতে লেখা তার একটি ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, আমরা দেশে একটি বড় পরিবর্তন আনছি এবং তা উত্তরপ্রদেশ থেকে শুরু করেছি। আমরা শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই করব এবং তাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে এবারে জয়ী হব।

অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির জোট সদস্য আরএলডির মুখপাত্র সন্দীপ চৌধুরী পিটিআইকে বলেছেন, আমাদের দলের টিকিট বণ্টনের মাপকাঠি হলো একজন প্রার্থীর ব্যাকগ্রাউন্ড। আর তাতে দেখা যাচ্ছে, আরএলডি এ পর্যন্ত যে প্রার্থীদের ঘোষণা করেছে, তাদের মধ্যে কারোরই কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ নেই।

তারা সকলেই শিক্ষিত এবং যোগ্য প্রার্থী যারা তাদের অঞ্চলের মানুষের সাথে ভালো যোগাযোগ রাখেন। আমাদের প্রার্থীদের কেউই বহিরাগত নয়। সকলেই বিধানসভা আসনের অন্তর্গত যেখানে তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে সহজেই অনুমেয় যে, তাদের নির্বাচনী এই কৌশল বা সিদ্ধান্ত বিজেপিকে আরও কঠিন প্রতিযোগিতা ও  চ্যালেঞ্জের মধ্যে পতিত করবে।

উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী স্বামী প্রসাদ মৌর্য এবং ধরম সিং সাইনি বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে যোগী আদিত্যনাথ সরকার এবং ক্ষমতাসীন বিজেপি থেকে এই সপ্তাহে পদত্যাগ করে রাজনীতিতে হইচই ফেলে দেন যারা পরবর্তীতে বিরোধী নেতা অখিলেশ যাদবের উপস্থিতিতে সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। এছাড়াও সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দিয়েছেন বিধায়ক বিনয় শাক্য এবং ভগবতী সাগর। অন্যদিকে আপনা দলের বিধায়ক চৌধুরী অমর সিং নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন জোট ছেড়েছেন- এটি গত কয়েকদিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দরবার থেকে একাদশতম পদত্যাগ।

এই পরিস্থিতিতে আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এতে অখিলেশ যাদব ইউপিতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়ে আরও উপকৃত হয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির সর্বশেষ ধাক্কায়, মন্ত্রী এবং ওবিসি নেতা ধরম সিং সাইনি গত বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন।

সাহারানপুরের নাকুদ থেকে চারবারের বিধায়ক সাইনি, ক্ষমতাসীন দলের সাথে গত কয়েকদিনে পদত্যাগ করা তৃতীয় প্রতিমন্ত্রী যিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ ছেড়ে দিলেন, আরও বিজেপির সাতজন বিধায়ক এবং বিজেপির সাথে জোটবদ্ধ আপনা দলের একজন গত তিন দিনে দল ছেড়েছেন। যা গত কয়েক মাস আগে হয়ে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের ঠিক উল্টো। সেখানে নির্বাচনের ঠিক আগে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজিপিতে যাওয়ার হিড়িক পড়েছিল। তবুও বিজেপির ভরাডুবি কেউ আটকাতে পারেনি। আরও শক্তি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠন করেছিল।

বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) ৪০৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও আপাতত, দলের সভাপতি বহেনজি খ্যাত মায়াবতী উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না, গত মঙ্গলবার দলের সাধারণ সম্পাদক সতীশ চন্দ্র মিশ্র সাংবাদিকদের একথা বলেছেন। সম্প্রতি মায়াবতী মনে করিয়ে দেন যে, বিএসপি ২০০৭ সালের মতোই আগামী নির্বাচনেও উত্তরপ্রদেশে নিজস্ব সরকার গঠন করবে। তিনি এএনআই-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আমি ক্ষমতা পাওয়ার জন্য নীতির সাথে কখনই আপস করিনি। আমাদের দলের সকল কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে এই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরুর কথা আমি বলে দিয়েছি।

তবে মায়াবতীর কথায় নতুন কিছু মেলেনি। ২০০৭, ২০১২ বা ২০১৭ তিনি সমস্ত ইউপি বিধানসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে, বিএসপি সাম্প্রতিক অতীতে কোনো বিধানসভা নির্বাচনে কোনো রাজ্যে কোনো দলের সাথে জোট করেনি। এর আগের নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে, একটি দল প্রায় ৩০ শতাংশ ভোট পেয়েও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতো যা বিজেপি এই ভোট ভাগকে প্রায় ৪০ শতাংশে ঠেলে দিয়ে বিএসপি এবং এসপি উভয়ের পক্ষেই ব্যবধান পূরণ করা কঠিন করে তুলেছে। তাই এই  বিধানসভা নির্বাচনে ৩০ শতাংশের কম ভোট পেলে বিজেপিকেও বিপর্যয়কর মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। তাই কৌশল হিসেবে বিজেপি ৫০ শতাংশের উপরে ভোট পাওয়ার দাবি করে প্রচার চালাচ্ছে যেটা তারা পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনেও করেছিল।

আমরা যদি গত দুটি নির্বাচনের ভোটের পরিসংখ্যানের দিকে ফিরে দেখি তাহলে দেখব, ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, বিজেপি ৩৮৪টি আসনে প্রার্থী করেছিল, ৩৯.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে ৩১২ টিতে জিতেছিল। এসপি ৩১১টি আসনে লড়েছে, ৪৭টি আসন জিতেছে এবং ২১.৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে।

বিএসপি সমস্ত ৪০৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল এবং ২২.২ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৯টি আসনে বিজয়ী হয়েছিল। ২০১২ সালের ইউপি বিধানসভা নির্বাচনে, এসপি সরকার গঠন করে। তারা ৪০১টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, ২২৪টি জিতেছে এবং ২৯.১৩  শতাংশ ভোট পেয়েছিল।

বিএসপি সমস্ত ৪০৩টি আসনে মাঠে নেমেছিল ২৫.৯১ শতাংশ ভোট পেয়ে ৮০টিতে জিতেছে। বিজেপি ৩৯৮টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল, ৪৭টিতে বিজয়ী হয়েছিল এবং এটি শতকরা হারের মাত্র ১৫ শতাংশ ভোট।

মায়াবতীর দাবি অনুযায়ী, যদি বিএসপিকে আবার নিজের ক্ষমতায় ফিরে আসতে হয়, তাহলে দলটিকে অনেক জায়গা কভার করতে হবে। তাদের ২০১৭ সালে পাওয়া ২২.২ শতাংশ ভোট শেয়ার প্রায় ৪০ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে যা বিজেপি পেয়েছিল। অন্যদিকে অখিলেশ যাদব ৪০০ আসনের দাবি করলেও আসলে ২০১২-এর পরিসংখ্যান ৩০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ বা তার বেশি ভোটে জিততে হবে।

উত্তরপ্রদেশে আগামী পাঁচ বছরের জন্য কে ক্ষমতায় যাবে তার ভাগ্য এখন মানুষের হাতে। হিন্দুত্বের ক্রমবর্ধমান বিতর্ক থেকে শুরু করে কংগ্রেসের মহিলা ভোটারদের নিয়ে তুরুপের তাস খেলা পর্যন্ত বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠছে যা আগামী মার্চ মাসেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।

নুরুল ইসলাম বাবুল ।। শিক্ষক, গবেষক