‘পদ্মা সেতু নিয়ে বিরূপ মন্তব্যকারীরা কি লজ্জা পেয়েছে?’
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জনগণের স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবে রূপ নেওয়ায় এটি নিয়ে বিরূপ মন্তব্যকারী বিএনপিসহ কতিপয় ব্যক্তি-গোষ্ঠীরা কি এখন আশাহত, নাকি লজ্জা পেয়ে নিশ্চুপ?- এ প্রশ্ন জনগণের।’
শনিবার (১২ ডিসেম্বর) ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘যদিও মানছি দূরত্ব, তবুও আছি সংযুক্ত’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। ওয়েবিনারে তথ্যমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। ওয়েবিনারটির সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম জেলার ডেপুটি কমিশনার ইলিয়াস হোসেন।
বিজ্ঞাপন
তথ্যমন্ত্রী জানান, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার যখন পদ্মা সেতুর কাজে হাত দেয়, তখন কোনো অর্থ ছাড়ের আগেই বিশ্ব ব্যাংক প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিল। তখন বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বিএনপিসহ দেশের কিছু গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিবর্গ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বিভিন্ন সভা-সিম্পোজিয়ামে পদ্মা সেতু নিয়ে নানা অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কানাডার আদালতে সেই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়।’
‘বিশ্ব ব্যাংক পরবর্তী সময়ে অর্থায়ন করতে চাইলেও প্রধানমন্ত্রী সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এবং সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। তখনও বিএনপিসহ এসব ব্যক্তি-সংস্থার মুখ বন্ধ ছিল না। তারা সবসময়ই এ প্রকল্প নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু গত ১০ ডিসেম্বর পদ্মার দুই পাড় সংযুক্ত হওয়ার পর তাদের আর কোনো বক্তব্য শোনা যাচ্ছে না। তাই জনগণের এখন প্রশ্ন বিএনপিসহ এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান কী লজ্জায় মুখ লুকিয়েছেন, নাকি আশাহত হয়েছেন?’ বলেন ড. হাছান।
বিজ্ঞাপন
দেশের বা সরকারের কোনো কাজে ভুলে পেলে বিদেশিরা যে সুরে কথা বলে বিএনপিসহ এসব সংস্থা-ব্যক্তি তার চেয়েও দশগুণ সুরে আওয়াজ তোলেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের এমন সাফল্যে যেখানে সবাই শেখ হাসিনা ও তার দলকে অভিনন্দন জানাচ্ছে, সেখানে তাদের এমন নীরবতাই প্রমাণ করে যে তারা আসলেই আশাহত।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ এ সেতু করতে পারবে না। আর করতে পারলেও কেউ এ সেতু দিয়ে যাবে না। তাই জনগণের প্রশ্ন- বিএনপির নেতারা কি এখন সেতুর ওপর দিয়ে যাবেন, নাকি নিচ দিয়ে যাবেন।’
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ে আলোকপাত করে সভায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে বর্তমানে আইসিটি নির্ভর চতুর্থ শিল্প বিপ্লব চলছে। আগের তিনটি শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকলেও বর্তমানের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গেই পথ চলছে। ভারত যেখানে ২০১৬ সালে ‘ডিজিটাল ভারত’ কিংবা যুক্তরাজ্য যেখানে ২০১৮ সালে ‘ডিজিটাল ইউকে’ ঘোষণা দিয়েছিল, সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালেই ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে তার সুদক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশকে সত্যিই ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছেন।
আ.লীগের এ নেতা আরও বলেন, দেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১১ কোটি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা আগামী বছর দ্বিগুণ করা সরকারে লক্ষ্য। এ খাতে ২০০৮ সালের ২৬ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় বর্তমানে ১ বিলিয়নে পৌঁছেছে। করোনা মহামারিতে স্থবির প্রায় বিশ্বের যে ক’টি দেশ ধনাত্মক প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছিল, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম।
এসএম