জর্ডানের বাংলাদেশ দূতাবাসে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান বুধবার (১৭ মার্চ) সকালে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। 

এসময় তার সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা এবং জর্ডানে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে বঙ্গবন্ধুর স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে দূতাবাসের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শন করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। এরপর পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বাণী পাঠ করা হয়। দেশটিতে করোনার কারণে সংক্ষিপ্ত পরিসরে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত ও প্রবাসী বাংলাদেশি প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান তার বক্তব্যের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, ১৭ মার্চ বাংলাদেশিদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে জন্ম নিয়েছিলেন বাঙালির মুক্তির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যেকোনো পরাধীন জাতি ততক্ষণ পর্যন্ত স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করতে পারে না, যতক্ষণ না একজন বিচক্ষণ ও সাহসী রাষ্ট্রনায়ক এবং নেতার আগমন না ঘটে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জন্য এমনই একজন বিচক্ষণ, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও সাহসী রাষ্ট্রনায়ক এবং নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন যার জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশিদের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন এবং পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের মানচিত্র প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা ও মহান স্বাধীনতার রূপকার। প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি ছিলেন বাঙালির আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে একটি সেক্যুলার (ধর্মনিরপেক্ষ) দেশ এবং একটি উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশির সমান অধিকার। তাই স্বাধীনতার মাত্র এক বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ একটি আধুনিক মানবিক সংবিধান রচনা করতে সমর্থ হয়। তার নেতৃত্বেই একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন দেশ ধীরে ধীরে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখছিল।

নাহিদা সোবহান বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন এবং দূরদৃষ্টির ধারাবাহিকতায় তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশ আজ এগিয়ে চলেছে উন্নয়নের মহাসড়কে। তার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিশ্বের কাছে আজ এক অপার বিস্ময়।

উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে জালাল উদ্দিন আহমেদ ও জনাব আব্দুল্লাহ আল মামুন বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, যতদিন বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে থাকবে ততদিন এই ১৭ মার্চ বাঙালির জন্য এক আনন্দময় দিন হিসেবে বিবেচিত হবে। জাতির জনকের জন্মদিনে প্রবাসীরা তাকে স্মরণ করছে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।

অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে কেক কেটে সবার মাঝে বিতরণ করা হয়। উল্লেখ্য, দিবসটি উপলক্ষে দূতাবাসে বাংলাদেশ, সিরিয়া, ফিলিস্তিন ও জর্ডানের শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজনের পরিকল্পনা থাকলেও শেষ মুহূর্তে জর্ডানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে আয়োজনটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।

এফআর/আরএইচ