এক যুগ পেরিয়েও একই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ লিগ
ফাইল ছবি
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর। একটু একটু করে পথ চলতে চলতে পেশাদার লিগ ১৩তম আসরে পা দিচ্ছে। এক যুগ পেরিয়ে গেলেও ক্লাব ও ফেডারেশন কারোরই পেশাদারিত্বের তেমন উন্নতি হয়নি। পেশাদার লিগের অন্যতম নির্ণায়ক হোম এন্ড অ্যাওয়েতে খেলা।
১৩ তম আসরে এসেও প্রকৃত অর্থে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়েতে খেলা হচ্ছে না। ঢাকার বাইরে ভেন্যু নিতে অনেক ক্লাবেরই অনীহা। বড় ও প্রভাবশালী ক্লাবগুলো ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামেই আঁকড়ে ধরতে চায়। এজন্য আর ভেন্যু সংখ্যা বাড়েনি সেই অর্থে।
বিজ্ঞাপন
১৩তম আসর শুরু করতে গিয়ে বাফুফে এবার হিমশিম খাচ্ছে মূলত ভেন্যু নিয়েই। করোনার কারণে ঢাকার বাইরে বেশি ভেন্যু করা সম্ভব হচ্ছে না। আরচ্যারির সঙ্গে অনেকটা যুদ্ধ করেই ভেন্যু নিয়েছে ফুটবল। কিন্তু টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে ফুটবলের সুযোগ সুবিধা নেই কিছুই। মুন্সিগঞ্জ জেলা স্টেডিয়ামেরও একই অবস্থা।
ভেন্যুর পাশাপাশি স্পন্সর নিয়েও সংকটে বাফুফে। মাঝে ঘোষণা দিয়েছিল দুবাই ভিত্তিক আন্তর্জাতিক কোম্পানির কাছে বাফুফে সকল স্বত্ত্ব বিক্রি করেছে। সেটা অবশ্য টিকেনি এক বছরের বেশি। ফেডারেশন কাপ ওয়ালটন স্পন্সর করলেও বুধবার লিগ শুরু হওয়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে স্পন্সরের নাম ঘোষণা করতে পারেনি ফুটবল ফেডারেশন।
বিজ্ঞাপন
এই প্রসঙ্গে এক যুগ লিগ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদি বলেন, ‘লিগে অবশ্যই আমাদের স্পন্সর থাকবে। কয়েকদিন পরেই বড় অনুষ্ঠান করে চুক্তি করা হবে।’ এখনো অবশ্য স্পন্সরের নামটি গোপনই রাখতে চাইছেন বাফুফের এই শীর্ষ কর্তা।
লিগ শুরুর আগের দিন আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করা ফুটবল ফেডারেশনের রেওয়াজ। সেই রেওয়াজে এবার কিছুটা ব্যতয় ঘটল। ভেন্যু, পূর্ণাঙ্গ ফিকশ্চার তৈরিতে বিলম্ব, স্পন্সর প্রসঙ্গ এড়াতে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের পরিবর্তে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক অনানুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন।
সেখানে তিনি লিগ নিয়ে সামগ্রিকভাবে বলেন, ‘আমরা লিগ আয়োজনের জন্য প্রস্তুত। আমাদের বাইলজে করোনা নিয়ে ইতোমধ্যে গাইডলাইন রয়েছে। লিগ চলাকালে প্রতিমাসে দুই বার করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। আমরা প্রয়োজনীয় সাহায্য করব। ঢাকার বাইরের ভেন্যুগুলোর প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রথম রাউন্ড শেষ হওয়ার আগেই প্রথম লেগের পূর্ণাঙ্গ ফিকশ্চার দেয়া হবে।’
লিগের প্রচার প্রচারণা অন্যান্য বারের মতো এবারও খুব কম। ১০ জানুয়ারি শেষ হয়েছে ফেডারেশন কাপ। চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস ৭২ ঘন্টার মধ্যেই আবার লিগ ম্যাচ খেলতে হচ্ছে। বসুন্ধরার অনুরোধ ছিল লিগটি কয়েক দিন পিছিয়ে শুরু করার।
বসুন্ধরার অনুরোধ অগ্রাহ্যর পেছনে বাফুফে সাধারণ সম্পাদকের যুক্তি, ‘আমরা ১৩ জানুয়ারি লিগ শুরুর ঘোষণা দিয়েছি অনেক আগেই। খেলা পেছানোর সংস্কৃতি থেকে ধীরে ধীরে ফিরতে চাই আমরা। নানা প্রতিবন্ধকতায় খেলা পেছানো হয়নি এবার।’
পেশাদার লিগের ১২টি আসর হয়েছে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী ৬ বার। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ বার শেখ জামাল। শেখ রাসেল ও বসুন্ধরা কিংস একবার করে। সর্বশেষ গত মৌসুমটি পরিত্যক্ত হয়েছে। এবারের মৌসুমে শিরোপার লড়াইটা মূলত বসুন্ধরা কিংস ও ঢাকা আবাহনীর মধ্যেই হবে। ফেডারেশন কাপের রানার্স আপ সাইফ স্পোর্টিং লিগে তরুণ দল নিয়ে কতটুকু চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে এর উত্তর সময় বলবে।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ বিকেল চারটায় চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস উত্তর বারিধারার বিরুদ্ধে লিগের উদ্বোধনী ম্যাচ খেলবে। বেসরকারি টেলিভিশন টি-স্পোর্টস ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।
এক নজরে এবারের লিগ
দল ১৩ : বসুন্ধরা কিংস, ঢাকা আবাহনী, শেখ রাসেল, শেখ জামাল, চট্টগ্রাম আবাহনী, মোহামেডান, সাইফ স্পোর্টিং, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র, রহমতমগঞ্জ,আরামবাগ,উত্তর বারিধারা, বাংলাদেশ পুলিশ।
ভেন্যু ৪ : (বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম,টঙ্গী,মুন্সিগঞ্জ ও কুমিল্লা)
বিদেশি ৪ : রেজিস্ট্রশন চারজন, মাঠেও চারজন )
চ্যাম্পিয়ন : ১০ লাখ টাকা
প্রিমিয়ার লিগের রোল অব অনার
চ্যাম্পিয়ন রানার্স আপ মৌসুম
ঢাকা আবাহনী ঢাকা মোহামেডান ২০০৬-০৭
ঢাকা আবাহনী ঢাকা মোহামেডান ২০০৮
ঢাকা আবাহনী ঢাকা মোহামেডান ২০০৯
শেখ জামাল ধানমন্ডি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ২০১০
ঢাকা আবাহনী মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ২০১১-১২
শেখ রাসেল শেখ জামাল ২০১২-১৩
শেখ জামাল ঢাকা আবাহনী ২০১৩-১৪
শেখ জামাল শেখ রাসেল ২০১৫
ঢাকা আবাহনী চট্টগ্রাম আবাহনী ২০১৬
ঢাকা আবাহনী শেখ রাসেল ২০১৭-১৮
বসুন্ধরা কিংস ঢাকা আবাহনী ২০১৯
পরিত্যক্ত পরিত্যক্ত ২০২০
এজেড/এটি/এমএইচ