ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের শিরোপার দৌড়ে থাকা লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের সামনে সুযোগ ছিল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা শেখ জামাল ধামমন্ডি ক্লাবের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমানোর। তবে সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মুর্তজারা। নাজমুল হোসেন শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের আবাহনী লিমিটেডের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে শিরোপার দৌড়ে খানিক পিছিয়ে পড়লো রূপগঞ্জ।

রোববার মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে শান্ত আর আফিফ হোসেনের ফিফটিতে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ২৭৯ রানের পুঁজি পায় আবাহনী। লক্ষ্য টপকাতে নেমে ৪১ ওভার ৫ বল খেলে ১৯৮ রানে গুটিয়ে যায় রূপগঞ্জ। এতে ৮১ রানের বিশাল জয় পায় আকাশী-নীলরা।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আবাহনী আজও শুরুটা ভালো করতে পারেনি। ৩০ রানের মধ্যে দুই ওপেনার ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন। ব্যক্তিগত ২২ রানে মাশরাফির বলে আউট হন নাঈম শেখ, আরেক পেসার আল-আমিন হোসেনের শিকারে পরিণত হন মাহমুদুল হাসান জয়। তার ব্যাট থেকে আসে ৬ রান। তৃতীয় উইকেটে আবাহনীকে পথ দেখান আফিফ হোসেন আর নাজমুল হোসেন শান্ত। ৭ চার এক ছক্কায় ৭২ বলে ৬২ রান করে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দিয়ে মুক্তার আলীর বলে বোল্ড হন আফিফ। 

পরে অধিনায়ক মোসাদ্দেককে নিয়ে আবাহনীকে বড় সংগ্রহের পথে রাখেন শান্ত। দুজনই অবশ্য সাকিব আল হাসানের শিকারে পরিণত হয়ে ফেরেন। ১৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেন শান্ত। ২৮ রান করেন মোসাদ্দেক। শেষ ১০ ওভারে তৌহিদ হৃদয়-মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন-জাকের আলী অনিকের তিনটি কার্যকরী ইনিংস আবাহনীকে বড় সংগ্রহ এনে দেয়। হৃদয় ১৬ বলে ২৪, সাইফউদ্দীন ২৭ বলে অপরাজিত ৩০ আর জাকের ৮ বলে ১৩ রান করেন। ১০ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন সাকিব।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকে চাপে ছিল রূপগঞ্জ। দলীয় ১০০ রানের আগেই ৫ উইকেট হারানো রূপগঞ্জ শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা হারে ৮১ রানে। তবে শুরুতে দলকে মোটামুটি ভালো একটা সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার। আবাহনীর বড় লক্ষ্যে মাথায় রেখে এদিন রকিবুল হাসানের সঙ্গে ওপেনিংয়ে উঠে আসেন সাব্বির রহমান। দুই ওপেনার থেকে ৪৭ রানের জুটি পায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ৩১ বলে ৩ চার এক ছক্কায় ২৭ রান করেন রকিবুল। শুরতে কিছুটা নড়বড়ে থাকা সাব্বির থিতু হয়ে বড় ইনিংসের আশা জাগিয়েও হতাশ করেন। ৫ চার এক ছক্কায় সাব্বিরের ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান। 

এরপর দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে রূপগঞ্জ। সাকিব আল হাসান ৩, দুর্দান্ত ফর্মে থাকা নাঈম ইসলাম ৭ আর উইকেট কিপার ব্যাটার ইরফান শুক্কর আউট হন এক রানে। ১০ বলে ৯ রান মাশরাফি বিন মর্তুজাও আউট হয়ে গেলে হারের প্রহর গুনতে থাকে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। তবে তানভীর হায়দারকে নিয়ে লড়াই জমানোর আভাস দেন ভারতীয় ব্যাটার চিরাগ জানি। দুই জনের ৫৪ রানের জুটি ভাঙে চিরাগের ৪৮ রানের বিদায়ে। এরপর মুক্তার আলীকে ৪০ রানের আরেকটি জুটি গড়েন তানভীর। 

এ দুটো জুটি রূপগঞ্জের হারের ব্যবধান কমিয়েছে মাত্র। ২২ রান করেন মুক্তার। ১৯৩ রানে মুক্তারের বিদায়ের পর দূত শেষ দুই উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রানে অলআউট হয় রূপগঞ্জ। ৩৬ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন তানভীর। ১০ ওভারে ৪০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন আবাহনীর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।            
   
টিআইএস