২২ গজের পাঠ চুকিয়ে আম্পায়ারিংয়ে রবিউল
বেশ সম্ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে নাম লিখিয়েছিলেন পেসার রবিউল ইসলাম শিপলু। তবে নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটাকে বড় করতে পারেননি তিনি। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বেশ কয়েকবার দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। পরে ফেরাটা সুখকর হয়নি। ২০১৯ সালে বাইশ গজের পাঠ চুকিয়ে দেন সাতক্ষীরার এই ক্রিকেটার। ক্রিকেট ছাড়ার পর এবার আম্পায়ারিংয়ের কোচিং করছেন ৩৪ বছর বয়সী রবিউল।
২০১০ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক রবিউলের। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে দেশের বাইরে কোনো টেস্ট সিরিজে সিরিজ সেরার পুরস্কার পান তিনি। ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে প্রথম বাংলাদেশি পেস বোলার হিসেবে এক সিরিজে শতাধিক ওভার বোলিং করার সক্ষমতা দেখান রবিউল। তার আগে সর্বোচ্চ ৯৯ ওভার বোলিং করার রেকর্ড ছিল খালেদ মাহমুদ সুজনের দখলে।
বিজ্ঞাপন
এরপর নিজের ক্যারিয়ারকে টানতে পারেননি এই ডানহাতি পেসার। মাত্র ৯ টেস্ট ৩ ওয়ানডে ও ১টি টি-টোয়েন্টিতেই থামে তার আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পথচলা। পরে ২০১৯ সালে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে বিদায় নেন তিনি। ক্রিকেট ছাড়ার পর এবার আম্পায়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান রবিউল। এজন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অধীনে আম্পায়ারিংয়ের কোর্স করছেন তিনি।
রোববার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রবিউল বলেন, ‘আসলে আমাদের এখানে আসার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আম্পায়ারিংয়ের একটি কোর্স হচ্ছে। তো সেই কোর্সের জন্যই আমরা এখানে আসছি। ক্রিকেট খেলা করেছি, সব মিলিয়ে যদি হিসেব করা হয়, ক্রিকেটের বাইরে কোচিং ক্যারিয়ার থাকে, আম্পায়ারিংয়ের ক্যারিয়ার থাকে। তো এরই মধ্যে কোচিং ক্যারিয়ারের একটা ধাপ সম্পূর্ণ করে এখান থেকে চলে গিয়েছিলাম। এটা বিসিবিরই একটা প্রোগ্রাম। তো সংবাদটা পাওয়ার পরেই এই কোর্সটা করতে এসেছি।’
বিজ্ঞাপন
আম্পায়ারিংয়ের এই কোচিং পরিচালনা করছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক ক্রিকেটার ও আম্পায়ার এনামুল হক মণি। তিনি এই কোর্সের ধরণ জানিয়ে বলেন, ‘এটা আসলে আমাদের নিয়মিত আম্পায়ার্স ট্রেনিং কোর্স। যেটাকে আমরা বলি কোয়ালিফাইং আম্পায়ার্স কোর্স। যারা আম্পায়ার কোয়ালিফাইড এখনো হয়নাই, মানে কোয়ালিয়াইড আম্পায়ার না, তাদের জন্য এই কোর্সটা করা হয়।’
খেলা ছাড়ার পর আম্পায়ারিংয়ে থিতু হয়েছিলেন মণি। ছিলেন আইসিসির এলিট প্যানেলের সদস্য। মণির মতো খেলা ছাড়ার পর আম্পায়ারিংয়ে থিতু হয়েছেন মাসদুর রহমান মুকুল, শরফউদ্দৌলা সৈকতরা। সেই সংখ্যাটা আরো বাড়াতে চান মণি।
তিনি বলেন, ‘এটির মূল উদ্দেশ্য সাবেক ক্রিকেটারদের যুক্ত করা আম্পায়ারিংয়ে। কারণ এখানে আমরা আস্তে আস্তে দিনে দিনে সাবেক ক্রিকেটারদের হারাতে যাচ্ছি আম্পায়ারিংয়ে। আমরা পরে খুব একটা সাবেক ক্রিকেটার আসেনাই। মুকুল, সৈকত সহ আরো কিছু ক্রিকেটার আসছে। আমরা চাচ্ছি এখন যেমন রবিউল ইসলাম শিপলু, ইমন আরো কিছু খেলোয়াড়, সাজিদ এরা আসছে। ভালো দিক যে সাবেক টেস্ট খেলোয়াড় অথবা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটাররা আসতেছে।’
‘এখান থেকে আসলে যদি আমরা ২০ জন ছেলেকে ট্রেনিং করাচ্ছি এই কোভিডের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মেনে। তো এর মধ্যে যদি আমরা ৫ জন ছেলেও পাই, তারমধ্যে ক্রিকেটার যদি তিন থেকে চারজন থাকত, তাহলে এটা খুবই ভালো। যেটা কিনা আমাদের প্রতিবছরের ইচ্ছা থাকে। এটিই আসলে মূল উদ্দেশ্য যে ক্রিকেটারদের মধ্যে থেকে আম্পায়ার তৈরি করা।’ যোগ করেন সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার।