অ্যাশেজের ঠিক আগে যদি টিম পেইনের ‘সেক্সট স্ক্যান্ডাল’ আবারও জনসম্মুখে বেরিয়ে না আসতো, তাহলে প্যাট কামিন্স থাকতেন দলের আর দশজন খেলোয়াড়ের মতো করেই। সেই প্যাট কামিন্সের হাতেই শেষমেশ যায় নেতৃত্বের ব্যাটন, সে নেতৃত্বের অভিষেকটা হলো আজ, তাও মর্যাদার অ্যাশেজ সিরিজে!

সেটাও কি দারুণভাবেই না উদযাপন করলেন অজি অধিনায়ক! ৩৮ রানে তুললেন ৫ উইকেট। সঙ্গে পেলেন জশ হেইজেলউড, আর মিচেল স্টার্কদেরও। তাতেই তাসমান সাগরপাড়ে প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডকে দুঃস্বপ্নের এক সূচনা উপহার দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তাদের প্রথম ইনিংস শেষ করে দিয়েছে মাত্র ১৪৭ রানেই।

টস জয়ের পর ব্যাট করার সিদ্ধান্তটা কেন নিয়েছিলেন, সেজন্যে হয়তো অধিনায়ক জো রুট এখন নিজেকেই বকুনি দিচ্ছেন একশো একটা। শুরুর এক ঘণ্টাতেই যে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সব পথ রুদ্ধ করে দাঁড়িয়েছিল অজি পেস আক্রমণ। 

ইংলিশদের বিভীষণের শুরুটা হলো একেবারে শুরুতেই। কী ভেবে যেন, শুরুর ওভার করতে আসা মিচেল স্টার্ককে প্রথম বলেই অফস্টাম্পে শাফল করে এসে খেলতে চেয়েছিলেন রোরি বার্নস। কাজের কাজ তো কিছু হলোই না, উল্টো হাফ ভলিতে লেগ স্টাম্পটা খোয়া গেল তার। 

শুরুটাই যেন এলোমেলো করে দিল ইংলিশদের। এর ওভার তিনেক পর তিনে নামা দাভিদ মালান হেইজেলউডের শিকার হয়ে ফিরলেন দুই অঙ্কে পৌঁছানোর আগেই। তিনি তো তাও রানের খাতা খুলতে পেরেছিলেন, ইংলিশ অধিনায়ক জো রুট যে তাও পারেননি! ওভারদুয়েক পর সেই হেইজেলউডের বলেই আউট হলেন দলকে ১১ রানে রেখে। 

‘অনির্দিষ্টকালের’ বিরতি শেষে বেন স্টোকস ফিরেছিলেন এই ম্যাচ দিয়ে। পাঁচে নেমে শুরুটা করেছিলেন বেশ স্থিতধী। দারুণ কিছু শটে ইংল্যান্ডকে আশা দেখাচ্ছিলেন কিছুক্ষণ, তবে দলের সে আশা মিলিয়ে গেল কিছু পরেই। কামিন্স ফেরালেন তাকে। অজি অধিনায়কের ‘নেতাগিরির’ সেই শুরু। 

সেই ‘নেতাগিরিতে’ কিছুক্ষণের জন্য বিরতি টানলেন ওপেনার হাসিব হামিদ ও ওলি পোপ। শুরু থেকে অন্য পাশে সতীর্থদের ফেরার মিছিল দেখলেও এক পাশ আগলে রেখেছিলেন হামিদ। তবে তার সে প্রতিরোধও টিকল কেবল মধ্যাহ্ন বিরতির পর্যন্তই। বিরতি থেকে ফিরেই হামিদ শিকার বনলেন কামিন্সের।

প্রতি আক্রমণের কৌশলে এরপর জস বাটলার ও পোপ মিলে দ্রুত কিছু রান তুলে চাপ ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন অজি শিবিরে। তবে সে কৌশল কিছু স্বল্পমেয়াদি সাফল্য দিলেও বড় কিছু করে দিতে পারেনি সফরকারীদের। জুটির পঞ্চাশের পরই ফেরেন বাটলার, স্টার্কের শিকার হয়ে। ক্যামেরন গ্রিনের বলে এরপর ফেরেন ওলি পোপও।

ক্রিস ওকস এসে দ্রুত কিছু রান জমা করেছিলেন সফরকারীদের স্কোরবোর্ডে। কিন্তু অপরপাশে কামিন্সের নিয়মিত বিরতিতে আঘাত হানা চলছিলোই। ওলি রবিনসন, মার্ক উডকে তুলে নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন ফাইফারের। শেষ ব্যাটার হিসেবে ওকসকে তুলে নিয়ে সে অপেক্ষাও শেষ করেন তিনি।

তাতে অধিনায়কত্বের অভিষেকটা বর্ণিলই হলো কামিন্সের। অন্যদিকে ইংলিশদের ‘ডাউন আন্ডারের’ শুরুটা হলো বিবর্ণ।

এরপর থেকে অবশ্য বৃষ্টির আধিপত্য দেখেছে ব্রিসবেন। ইংলিশ ইনিংসের পর থেকে বলই মাঠে গড়াতে পারেনি আর।

এনইউ/এটি