আগের ম্যাচে ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের কাছে হারের ক্ষত এখনো দগদগে মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবের। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে সাদা-কালোরা। বিধ্বস্ত করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রকে। রোববার (২৭ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম ম্যাচে তারা ৪-১ গোলে হারায় অলরেডদের। 

এই জয়ে ডি-গ্রুপ থেকে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে এগিয়ে থাকল মতিঝিল পাড়ার ক্লাবটি। আগামী বুধবারের ম্যাচে আবাহনীর কাছে মুক্তিযোদ্ধা হারলেই শেষ আটের টিকিট নিশ্চিত হবে মোহামেডানের। 

আগের ম্যাচ হারায় মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে কাল সাদা-কালোদের ছিল বাঁচা-মরার লড়াই। তাই শুরু থেকেই গোল পেতে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে মোহামেডান। ম্যাচের চার মিনিটে মোহামেডান অধিনায়ক উরিও নাগাতার দারুণ পাস খুঁজে নেয় আমির হাকিম বাপ্পিকে। তার শট কর্ণারের বিনিময়ে প্রতিহত করেন মুক্তিযোদ্ধা গোলকিপার মাহফুজ হাসান প্রিতম। 

প্রথম অর্ধের ১৮ মিনিটের মাথায় তৃতীয় কর্ণার পায় মোহামেডান। শাহেদ মিয়ার ছোট কর্নারে বল পান হাবিবুর রহমান সোহাগ। তিনি পাস দেন অধিনায়ক নাগাতাকে। জাপানি এ মিডফিল্ডারের ডিফেন্স চেরা পাস খুঁজে নেয় সোহাগকে। তার নেয়া শট কর্নারের বিনিময়ে ফিরিয়ে দেন মুক্তিযোদ্ধা গোলকিপার। ৪১ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোলের দেখা পায় মোহামেডান। 

বক্সের খুব কাছ থেকে ফ্রি কিকে বাঁ পায়ে দারুণ সেট পিসে গোল করেন হাবিবুর রহমান সোহাগ। বক্সের একটু বাইরে মোহামেডানের অ্যাবিওলা নুরাতকে ফাউল করেন মুক্তিযোদ্ধার এক খেলোয়াড়। রেফারি ফ্রি কিকের বাঁশি দেন। তাতেই গোল করে সাদা-কালোদের উচ্ছ্বাসে ভাসান সোহাগ। 

দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফেরে মুক্তিযোদ্ধা। ৬৮ মিনিটে সুজন মিয়ার নিখুঁত ক্রসে বক্সের মধ্যে উজবেকিস্তানের ফরোয়ার্ড আকবার আলী খোলদারভের হেড খুঁজে নেয় মোহামেডানের জাল। সমতায় ফিরে উল্লাসে মেতে উঠে অলরেডরা। অবশ্য তাদের সেই উৎসব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে সোহাগের কর্নারে মুক্তিযোদ্ধার আকবর আলীর মাথা ছুঁয়ে যাওয়া বলে হেড করেন মোহামেডানের অধিনায়ক উরিও নাগাতা। উড়ে আসা বলে মাথা ছুয়ে বল জালে জড়ান আতিকুজ্জামান। 

মিনিট পাঁচেক পর ফের সাদা-কালোদের উৎসবের উপলক্ষ্য এনে দেন নাইজেরিয়ান মিডফিল্ডার মোহাম্মদ অ্যাবিওলা নুরাত। বাঁ প্রান্ত দিয়ে সজীবের ক্রসে অনেকটা অরক্ষিত অবস্থায় বল পান তিনি। ঠান্ডা মাথায় প্লেসিং শটে বল জালে জড়ান নুরাত। ৮৩ মিনিটে মোহামেডানের জয়ের ব্যবধান বড় করেন সেই নুরাত। একক প্রচেষ্টায় মুক্তিযোদ্ধার বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শটে দুর্দান্ত গোলে পরিণত করেন নুরাত। শেষে এই ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে মতিঝিল পাড়ার দলটি।

মুক্তিযোদ্ধা স্বল্প প্রস্তুতিতে ফেডারেশন কাপে অংশ নিয়েছে। আর্থিক ও সাংগঠনিক সমস্যায় দল গঠনই অসম্ভব হয়ে পড়েছিল তাদের। শেষ মুহূর্তে মুক্তিযোদ্ধার জাপানি ফুটবলার কাতোর উদ্যোগে জাপানি কোম্পানীর পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে ফেডারেশন কাপ খেলতে নেমেছে মুক্তিযোদ্ধা। গ্রুপের শেষ ম্যাচে ঢাকা আবাহনীর বিরুদ্ধে না জিতলে এই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হবে তাদের।

এজেড/এমএইচ