ছবি: সংগৃহীত

স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে চাকরিটা ১৮ মাসও টেকেনি চেলসি কিংবদন্তি ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের। গত সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরে তাকে কোচের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে চেলসি কর্তৃপক্ষ। পদ হারানোর পর এবার ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রামে প্রতিক্রিয়া জানালেন ল্যাম্পার্ড। চেলসিকে ‘সামনে এগিয়ে নেয়ার’ সুযোগ না পাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।

চেলসির ডাগআউটে গেল ২০১৯-২০ মৌসুমের শুরুতে এসেছিলেন ল্যাম্পার্ড। সাবেক ডার্বি কাউন্টির কোচ নতুন পদে ধাতস্থ হতে সময়ও নেননি খুব একটা। ১৮ মাসের সংক্ষিপ্ত সময়ে বইয়ে দিয়েছেন একগাদা পরিবর্তনের হাওয়া। নিজের প্রথম ম্যাচেই অভিষেক করিয়েছিলেন ইংলিশ মিডফিল্ডার ম্যাসন মাউন্টকে, যাকে ভবিষ্যত চেলসি কাণ্ডারি হিসেবে দেখছে ইংলিশ সংবাদ মাধ্যম। চেলসি কোচ হিসেবে নিজের ‘শেষ’ ম্যাচে অধিনায়কের বাহুবন্ধনীটাও তাকে পরিয়েছিলেন ল্যাম্পার্ড।

তরুণদের সুযোগ দেয়া তো ছিলোই। ল্যাম্পার্ড দলকে ‘সাফল্য’ পাইয়ে দিয়েছিলেন প্রিমিয়ার লিগ আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও। ২০১৬-১৭ মৌসুমে আন্তোনিও কন্তের অধীনে শেষবার প্রিমিয়ার লিগ জেতার পর আর সেটা ধরে রাখতে পারেনি চেলসি। পরের মৌসুমে তো খেলতে পারেনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগও! সেই ল্যাম্পার্ড পূর্বসূরী মাউরিজিও সারির রেখে যাওয়া দলকে নিয়ে যান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। আর ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসরে বিদায় নেন বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে, যারা পরে শিরোপা জিতেছিল; পরে বার্সেলোনার মতো দলকেও হারিয়েছিল ৮-২ ব্যবধানে।

চলতি মৌসুমের শুরুর দিকে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে ছিল চেলসি। এরপর একটা বড় সময় ছিল লিগের শীর্ষ চারে। গেল মাসের শেষে তো ছিল চূড়ায় ফেরার হাতছানিও। শেষ তিন-চার বছরে চেলসির ফর্ম বিচারে মোটামুটি পাশ নম্বর পেয়ে উতরে যাওয়ার মতোই রেকর্ড ছিল ল্যাম্পার্ডের।

কিন্তু বোর্ডে উচ্চাকাঙ্ক্ষী রোমান আব্রাহামোভিচের মতো কর্তা থাকলে যা হয়, শেষ এক মাসের বাজে ফর্মকে সহ্য করেনি চেলসি বোর্ড। ক্লাব কিংবদন্তি, দলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা তকমাগুলোও যথেষ্ট হয়নি ল্যাম্পার্ডের চাকরি বাঁচাতে, ফলে পদ হারান চেলসি কোচ।

তবে আব্রাহামোভিচ এরপর স্বভাববিরুদ্ধ একটা বিবৃতিও দিয়েছেন। বলেছেন যে, ল্যাম্পার্ডের সঙ্গে ‘ব্যক্তিগত সম্পর্ক বেশ’ তার, ‘ভবিষ্যতে কখনো আবারও স্বাগত জানান হবে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে’। জোসে মরিনিও, কার্লো অ্যানচেলত্তিদের মতো বাঘা বাঘা কোচেরাও এমন কিছু পাননি বিদায়বেলায়।

ল্যাম্পার্ড নিজে ক্লাবের সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে এক বিবৃতি দেন। সু্যোগ হারানোর হতাশাও প্রকাশ করেন তিনি, ‘চলতি মৌসুমে ক্লাবকে সামনে এগিয়ে নেয়ার একটা সুযোগ ছিল আমার সামনে, সেটা কাজে লাগাতে পারিনি বলে হতাশাও আছে একটু।’

তবে নিজের ‘অর্জন’ আর ক্লাবের তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য গর্ব নিয়েও চেলসি-অধ্যায়টা শেষ করছেন ল্যাম্পার্ড, ‘যখন আমি এই পদে এসেছিলাম, তখনই ভেবেছিলাম সময়টা মোটেও সহজ হবে না আমার, কারণ ক্লাবের সময়টাও ভালো যাচ্ছিল না। যে অর্জনগুলো করেছি, সেজন্যে আমি গর্বিত। অ্যাকাডেমির তরুণ খেলোয়াড়রা যেভাবে মূল একাদশে উঠে এসেছে, পারফর্ম করেছে তাতেও আমি গর্বিত। তারা ক্লাবের ভবিষ্যত।’

ল্যাম্পার্ডের উত্তরসূরী হিসেবে সাবেক পিএসজি কোচ থমাস টুখেলের যোগ দেয়াটা একরকম নিশ্চিত। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, আগামীকাল বুধবার উলভারহ্যাম্পটনের বিপক্ষে ম্যাচে নামার আগেই আসবে চূড়ান্ত ঘোষণা।

এনইউ/এটি