আবাহনী একটি ক্লাব নয়, একটি ইন্সটিটিউট
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ কামাল নিজে খেলতেন ক্রিকেট ও বাস্কেটবল। তরুণ বয়সে প্রতিষ্ঠা করেছেন ঢাকা আবাহনী ক্লাব। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত আবাহনী ক্লাব এখন দেশের ক্রীড়াঙ্গনের এক মহীরুহ। আবাহনী থেকে কত ফুটবলার, ক্রিকেটার, হকি খেলোয়াড় এবং ক্রীড়া সংগঠকের জন্ম।
দেশের ফুটবলের অন্যতম কিংবদন্তী কাজী সালাউদ্দিন প্রথম বিভাগ ফুটবলের যাত্রা শুরু ওয়ারীতে ১৯৬৯ সালে। পরের বছর খেলেন মোহামেডানে। স্বাধীনতার পর প্রথম টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা দিবসও খেলেন মোহামেডানের হয়ে। সেই টুর্নামেন্টে হ্যাটট্রিক সহ সর্বোচ্চ গোলদাতা সালাউদ্দিন। সেই সালাউদ্দিন শেখ কামালের অনুরোধ ও আমন্ত্রণে আবাহনীতে যোগ দেন। ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত আবাহনীতে খেলেন।
বিজ্ঞাপন
আবাহনী প্রতিষ্ঠা এবং মানুষের কাছে আবাহনী পৌছে যাওয়াকে শেখ কামালের সংগঠক হিসেবে বড় সফলতা দেখছেন সালাউদ্দিন, ‘শেখ কামালের একটি ভিশন ছিল। সে বেঁচে থাকলে আবাহনী এবং ক্রীড়াঙ্গন অনেক দূর যেত। আবাহনী শুধু একটি ক্রীড়া ক্লাব নয় একটি ইনস্টিটিউশন। আমার মনে হয় না বাংলাদেশে একজন মানুষও পাওয়া যাবে যে আবাহনীর নাম শুনেনি বা জানে না।’
শেখ কামাল শুধু ক্লাব গড়েই সংগঠক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেননি। খেলোয়াড় সংগ্রহেও কারিশমা দেখিয়েছেন। সালাউদ্দিন, টিপু, সাদেকদের মতো সুপারস্টারদের প্রথম বছরেই আবাহনীতে এনেছেন। শুধু তারকা খেলোয়াড় নয়, ভবিষ্যত তারকা খেলোয়াড়ও গড়ার ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছেন। দেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু শেখ কামালের একেবারে হাত ধরেই আবাহনীতে এসেছেন।
বিজ্ঞাপন
শেখ কামালের প্রয়াণের দিনে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে চুন্নু বলেন, ‘আমি ফুটবলার হিসেবে নিজেকে যতটুকু পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি এর পেছনে মূল অবদান বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বিশেষ করে কামাল ভাইয়ের। কামাল ভাই হাতে ধরে আমি আবাহনীতে এসেছিলাম। আবাহনীতে না আনলে আমি হয়তো এই চুন্নু নাও হতে পারতাম। আমি খুবই তরুণ ছিলাম। অনেক সমালোচনা হয়েছে প্রথম দিকে আমাকে নিয়ে, কামাল ভাই আমাকে আগলে রাখতেন। তিনি বলতেন, ‘ওই একদিন ক্লাবকে জেতাবে, সেরা খেলোয়াড় হবে।’ শেখ কামাল কোনো অংশ ভুল বলেননি। চুন্নুর মাধ্যমে ঢাকা আবাহনী একাধিক শিরোপা জেতে এবং বাংলাদেশের ফুটবলে কিংবদন্তিতে পরিণত হন।
১৯৭৯ সালে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে কাতারের সঙ্গে ড্র করেছিল বাংলাদেশ ঢাকা মাঠে। সেই কাতার এখন বিশ্বকাপ আয়োজন করছে। আর বাংলাদেশ সাফের গ্রুপ পর্ব পার হতে পারে না।
গত ৪০ বছরের বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের ক্রীড়াঙ্গন খুব বেশি এগুইনি। আমি যদি আমার সাবজেক্টের কথা বলি। ফুটবলে এখন কাতার বিশ্বকাপ খেলছে ও আয়োজন করছে। সেই কাতারের বিরুদ্ধে আমরা হারিনি এবং আমার নিজেরই গোল আছে। ফুটবলে দুইশ’র বেশি দেশ খেলে। প্রতিটি দেশেরই এক নম্বর খেলা। ফুটবলে উন্নতির জন্য অর্থের প্রয়োজন। সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আর্থিক সাহায্য করলে ফুটবলে উন্নয়ন সম্ভব।’
এজেড/এটি