বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে মিছিল শুরু করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। কাঁটাবন হয়ে মিছিলটি শাহবাগে গিয়ে সেখানে অবস্থান নেওয়ার কথা।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শুক্রবার (১৯ মার্চ) এ বিক্ষোভ মিছিল রাজু ভাস্কর্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ভাস্কর্যের পাদদেশে আগে থেকেই ছাত্রলীগ অবস্থান নেওয়ায় সমাবেশস্থল পরিবর্তন করেছে প্রগতিশীল  ছাত্রসংগঠনগুলো।

মোদিবিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা/ ছবি: ঢাকা পোস্ট

বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ মিছিলে জোটের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। এ সময় তারা ‘ব্যাক মোদি, গো ব্যাক ইন্ডিয়া’, ‘ফ্যাসিবাদের আস্তানা, জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’, ‘কসাইদের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও’, ‘লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘তিস্তার পানির ন্যায্য হিসাব, দিতে হবে দিতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া নেতারা জানান, তাদের কর্মসূচি বানচাল এবং হামলা করতেই ছাত্রলীগ রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নিয়েছে। তাই তারা টিএসসি থেকে কাঁটাবন হয়ে শাহবাগে অবস্থান নেবেন। যেকোনো মূল্যে তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

শাহবাগ এলাকায় ছাত্রলীগ এবং পুলিশ অবস্থান নেওয়ায় প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের বিক্ষোভ মিছিলটি।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে মোদিবিরোধী সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় প্রগতিশীল নয়টি ছাত্র সংগঠন। একইদিন বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক সমাবেশ থেকে বাম সংগঠনগুলোর মোদিবিরোধী সমাবেশ প্রতিহতের ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস।

মোদির আগমন ঠেকাতে রাস্তায় নামার আহ্বান

এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন ঠেকাতে ২৬ মার্চ সবাইকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ও সমমনা ইসলামিক দলগুলোর সমন্বয়ক আব্দুর রব ইউসুফী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী মোদিকে কোনোভাবে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হবে না।

মোদির আগমন ঠেকাতে রাস্তায় নামার আহ্বান জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহ-সভাপতির

শুক্রবার (১৯ মার্চ) জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিল থেকে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অন্য সব রাজনৈতিক দলের মতো উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করতে চাই। ডিএমপির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অনুষ্ঠানে বিদেশি অনেক অতিথি আসবেন। তাদের আমরা স্বাগত জানাই। কারণ, এটা আমাদের মর্যাদার বিষয়। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের পানি দিয়ে মারে, আবার পানি না দিয়েও মারে। নরেন্দ্র মোদির হাতে আমাদের ভারতের মুসলমানের রক্ত লেগে আছে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশের ১০ দিনব্যাপী আয়োজনের সূচনা হয়েছে গত ১৭ মার্চ, জাতির জনকের জন্মদিনে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীতে তার সমাপ্তি হবে। প্রতিবেশী পাঁচ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরাও বাংলাদেশের এ উদযাপানের সঙ্গী হচ্ছেন। আয়োজনের প্রথম দিন বুধবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে যোগ দেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। এছাড়া নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী ২২ মার্চ, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ২৪ মার্চ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে ঢাকায় আসবেন।

এফআর/এমএআর