কবর খুঁড়ে আ.লীগ নেতার মাথা ও হাত কেটে নেওয়ার অভিযোগ
মির্জা আলম চেনু বিশ্বাসের খোঁড়া কবর
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মৃত্যুর সাত দিন পর মির্জা আলম চেনু বিশ্বাস নামের আওয়ামী লীগের এক নেতার কবরের বেড়া ভেঙে ও মাটি খুঁড়ে হাত ও মাথা কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে এলাকাবাসী ও মৃত ব্যক্তির পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের মানিকদিয়াড় গোরস্তানে এই নিকৃষ্ট ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত ওই ব্যক্তি দৌলতপুর বাজারপাড়া এলাকার মৃত মকছেদ মন্ডলের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এবং সাবেক ইউপি সদস্য। ৪ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মির্জা আলম বিশ্বাস চেনু মৃত্যুবরণ করেন।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে মৃত মির্জা আলম বিশ্বাসের ছেলে জীবন বিশ্বাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় একটি অভিযোগ করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে গোরস্তানের পাশে এলাকার শিশুরা খেলতে গিয়ে কবর খোঁড়া অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় তারা লোকজনকে বিষয়টি জানায়। পরে লোকজন কবরস্থানে গিয়ে মৃত ব্যক্তির কবর খোঁড়া অবস্থায় দেখতে পান। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকাবাসীর মধ্যে।
বিজ্ঞাপন
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, কবর খুঁড়ে মির্জা আলম বিশ্বাসের লাশের মাথা ও ডান হাত কেটে নিয়ে গেছে। যারা এই জঘন্য অপরাধ করেছে, তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। তারা জানান, উপজেলার মানিকদিয়াড় গোরস্তানে এক সপ্তাহ আগে মৃত্যুবরণ করা মির্জা আলম বিশ্বাসের কবর খোঁড়া, খাঁচা ওঠানো, কবরের মাঝখানের বাঁশ কাটা, কবরের ভেতরে দেখা যায় লাশের ডান হাত কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু মাথা আছে কি না, সেটি স্পষ্ট নয়।
এ বিষয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ মামুনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ মামুনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মহিউল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কে বা কারা কবর খুঁড়ে লাশের হাত ও মাথা কেটে নিয়ে গেছে৷ ঘটনাটি চরম নিন্দনীয়, ঘৃণিত ও উদ্বেগজনক। পুনরায় যেন এ ঘটনা এলাকায় না ঘটতে পারে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল আলম ঢাকা পোস্টকে জানান, স্থানীয় ব্যক্তিরা খবর দিলে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। করব খোঁড়া ও বাঁশের বেড়া ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। লাশটি পুনরায় কবরস্থ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে গোরস্তান কমিটির লোকজনকে গোরস্তানটি রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য বলা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাজু আহমেদ/এনএ