সংবাদ সম্মেলনে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা

‘আজকে আমার গাড়িবহরে হামলার পর জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন তিনি হামলার বিষয়টি দেখবেন।’ বৃহস্পতিবার ফেনী ও চট্টগ্রামে দুইবার নিজের গাড়িবহরে হামলার প্রতিক্রিয়া জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি নেত্রীর বাহিরে কিছু বলতে পারব না। তাই আমি কোনো হরতাল বা কর্মসূচি দিলাম না।’ 

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার বসুরহাট বাজারের রুপালি চত্বরে পৌরসভা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সামনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ‘নেত্রীর বাহিরে আমাদের অস্তিত্ব নেই’ উল্লেখ করে তিনি সব নেতাকর্মীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।

চট্টগ্রামের হামলার ঘটনাটি তিনি নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ওপর দায় চাপিয়ে বলেন, ‘একরাম তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকজন দিয়ে এই হামলা চালিয়েছেন। আমি যদি তখন গাড়িতে থাকতাম তাহলে আমার অনেক বিপদ হতে পারত।’

এরআগে শপথ নিতে চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে ফেনীর দাগনভূঞায় হামলার কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে স্থানীয় একটি টিভির লাইভ সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় দ্বিতীয়বারের মতো গাড়িবহরে হামলা করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে শপথ নেওয়ার জন্য চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে ভোর সাড়ে ৬টায় দাগনভূঞা জিরোপয়েন্টে দুর্বৃত্তরা আবদুল কাদের মির্জার গাড়িবহরে হামলা চালায়। হামলায় সেলিম (৫০) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা আহত হয়েছেন। আহত সেলিম কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

এ ঘটনায় তখন ফেসবুক লাইভে এসে নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী ও ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীকে দায়ী করেছেন আবদুল কাদের মির্জা।

তিনি বলেন, ‘একরাম চৌধুরী এতো দাপট দেখিয়ে চলে। তারা আমাদের ওপর হামলা করার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। এ দেশে কি সরকার নেই, প্রশাসন নেই? আজকে আমাদের এলাকার কি কোনো অভিভাবক নেই? কেউ কি প্রতিবাদ করার নেই? আমরা এই এলাকার জনগণ যাকে মন্ত্রী বানিয়েছি সেই মন্ত্রীর কাজ কী? সেই মন্ত্রী অপশক্তির কাছে আজকে মাথা নত করেছে।’

সেই সময় কাদের মির্জা আরও বলেন, ‘যারা ফেনীতে একরামকে হত্যা করেছে ঠিক একই কায়দায় আমাকে হত্যা করার জন্য একরাম চৌধুরীর সন্ত্রাসীরা, নিজাম হাজারীর সন্ত্রাসীরা আমার গাড়ির গতিরোধ করে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি একটি ট্রাক থাকার কারণে আমার গাড়িটি দ্রুত চলে আসছে। আমার গাড়িতে কিছু করতে পারেনি। আমার পরে ১০-১২টি গাড়ি ছিল, সেগুলোর ওপর ইট-পাটকেল, ডিম মারা হয়েছে। সেলিম নামে আমাদের একজন নেতা আহত হয়েছেন।’

কাদের মির্জা বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই ঘটনাগুলোর সাথে যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। না হলে আপনার সকল অর্জন এরা ধ্বংস করবে। এদেরকে কারা আজকে শেল্টার দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিন। তাদেরকে চিহ্নিত করেন। সে যত বড় নেতা হোক, যত বড় মন্ত্রী হোক তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেন।’

উল্লেখ্য, বসুরহাট পৌরসভায় চতুর্থবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা। নির্বাচনে প্রচারণার সময় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন তিনি। 


হাসিব আল আমিন/এমএসআর