কম সময়ে বেশি লাভ, শসা চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা
গাছে গাছে ঝুলছে শসা
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় এখানকার মাটি সবজি চাষের জন্য উপযোগী। জেলায় ধান, গম, ভুট্টা, বাদাম, সরিষা, তরমুজ, টমেটোর মতো চাষ হচ্ছে শসার। চলতি মৌসুমে শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন এবং দাম ভালো হওয়ায় ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা।
জানা গেছে, গত বছর করোনার কারণে শসা বিক্রি করতে না পেরে ফেলে দিতে হয়েছিল চাষিদের। সেই শসা এবার জমি থেকেই পাইকাররা নিচ্ছেন ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে। তবে গত কয়েক দিন আগে এ শসা ১৮ থেকে ২০ টাকা দরে অনেক কৃষক বিক্রি করেছেন। তবে এবার শসার দাম কিছুটা পাওয়ায় কৃষকদের মলিন মুখে ফুটছে হাসি।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, কৃষকরা তাদের শসার খেতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাচায় ঝুলছে সবুজ রংয়ের শসা। নজর কাড়ছে হলদে ফুল।
কৃষকরা জানান, শসার বীজ বোনার ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে গাছে ফল ধরা শুরু হয়। এক বিঘা জমিতে শসার আবাদ করতে খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। তবে দাম ভালো থাকলে এক বিঘা জমির শসা ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বিক্রি করা যায়। কম সময়ে খরচের চেয়ে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে দিন দিন শসা চাষের দিকে মনোযোগী হচ্ছেন চাষিরা।
বিজ্ঞাপন
কথা হয় জেলার সার উপজেলার হাফিজাবাদ এলাকার কৃষক আব্দুর রউফের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি এ বছর ৩ একর জমিতে শসার চাষ করেছি। গাছে ফলনও ভাল হয়েছে। পাইকাররা খেতে এসে শসা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রথমে দাম ভাল পেলেও এখন কিছুটা কমে গেছে। তবে যে দাম রয়েছে তা অব্যাহত থাকলে গতবছরের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারব।
একই কথা বলেন তেলিপাড়া এলাকার কৃষক রাজু ইসলাম। তিনি বলেন, শসা চাষে সময় ও লাভ বেশি হওয়ায় আমি এ বছরও শসার চাষ করেছি। গত বছর করোনার কারণে লকডাউন হওয়ায় শসা বিক্রি করতে পারিনি। এবার দাম ভাল পাচ্ছি। আশা করছি, এই দাম থাকলে শসা থেকে ভালো লাভ করতে পারব।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৫ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন জাতের ৫ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে শাক সবজির আবাদ হয়েছে। তবে তার মধ্যে ২৬৫ হেক্টর জমিতে শসার আবাদ হয়েছে। তবে সদর উপজেলায় শসার চাষ বেশি হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
শসা চাষ একটি লাভজনক ফসল। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিগত বছরের তুলনায় শসার ব্যাপক আবাদ হয়েছে। বাজারে শসার চাহিদা ভাল থাকায় কৃষকরা দামও ভাল পাচ্ছেন। কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
কৃষিবিদ মিজানুর রহমান, উপ-পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর
রনি মিয়াজী/এসপি