কুমিল্লায় চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ
শীতে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ
মাঘ মাসের শুরুতে কুমিল্লায় এখন চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। প্রচণ্ড শীতে এমনিতেই কাবু কুমিল্লার মানুষ। এরই মধ্যে বুধবার (২০ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। ফলে শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না মানুষ। আর এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন অটোরিকশা চালকসহ খেটে খাওয়া মানুষ।
কুমিল্লার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, কুমিল্লায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কাছাকাছি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে রেকর্ড করা হয়। আকাশ মেঘলাসহ আগামী তিনদিনের মধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বা হামলা বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া দিনের বেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা না থাকা এবং কুয়াশার প্রভাবে সূর্যের আলো প্রকৃতিতে না পৌঁছানোর কারণে সন্ধ্যার পর থেকে জুড়ে বসতে থাকে শীত। রাত যত বাড়তে থাকে তাপমাত্রাও তত কমতে থাকে। শুরু হয় শীতের তীব্রতা।
কুমিল্লা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা ইসমাইল ভূঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, শীতের এই মৌসুমে কুমিল্লায় সর্বনিম্ন ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা নেমে আসে। ৯.৩ থেকে ১০.১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করলেও সর্বশেষ সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে তাপমাত্রা ছিল ১০-৮ডিগ্রি সেলসিয়াস। বর্তমান তাপমাত্রা আরও কমে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিতে পারে।
বিজ্ঞাপন
জানুয়ারি মাসে কুমিল্লায় সবচেয়ে বেশি শীত পড়ে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, জানুয়ারিতে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। এই ঋতুতে দিনের তুলনায় রাত বড়। শৈত্যপ্রবাহ বা কুয়াশার কারণে সূর্যের কিরণ বাধাগ্রস্ত হয়। যার কারণে বিকেল থেকেই শীত অনুভব হতে শুরু করে। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় শীতের তীব্রতা। আবার কুয়াশা ভেদ করে দিনের বেলায় সূর্যের কিরণ দেখা দিলে স্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা বেড়ে ২৫-২৬ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ওঠানামা করে।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরীর টাউন হলের সামনে কোদাল আর ডালি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন কিছু শ্রমজীবী মানুষ। তারা জানান, প্রতিদিন এখানে এসে দাঁড়ান তারা। শহরের বিভিন্ন এলাকার লোকজন দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য তাদের নিয়ে যান। প্রতিদিন সকাল ৮টার মধ্যেই তারা কাজে লেগে পড়েন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে এ দিন সকাল ১০টা গড়িয়ে গেলেও কেউ তাদের নিতে আসেনি।
কুমিল্লা চকবাজার এলাকার রিকশাচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, খুব সকালে তিনি যখন রিকশা নিয়ে বের হন, তখন কুয়াশার মধ্যে ফোটা ফোটা পানি পড়ছিল। তিনি ভেবেছিলেন, শিশির পড়ছে। তাই বৃষ্টির কোনও প্রস্তুতি নেননি। খানিক বাদেই যখন বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ে, তখন তিনি বুঝতে পারেন এ গা হিম করা বৃষ্টি! এখন পেটের দায়ে বৃষ্টিতে ভিজেই রিকশা চালাতে হচ্ছে তাকে।
নগরীর রাজগঞ্জ এলাকায় অটোরিকশা নিয়ে বসে আছেন কয়েকজন। এরমধ্যে রফিক মিয়া নামের অটোরিকশা চালক বলেন, ‘এমনিতে কুমিল্লা নগরীতে অটোর সংখ্যা বেশি। এরমধ্যে বৃষ্টি হওয়ায় যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। মালিককে দৈনিক অটোর ভাড়া ৫০০ টাকা দেওয়া কঠিন হবে।’
এমএসআর