ভোটের দুদিন আগে সুজানগর পৌরসভা নির্বাচন স্থগিত
সুজানগর পৌরসভা ভবন
নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দুদিন আগে সীমানা জটিলতার কারণ দেখিয়ে পাবনার সুজানগর পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সুজানগর পৌরসভা নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তা পৌরসভার সব নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে নির্বাচন কমিশন থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সুজানগর পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি আসে। চিঠি পাওয়ার পরই নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে মর্মে পৌরসভায় মাইকিং করা হয়েছে। আগামীকাল শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সুজানগর পৌরসভায় ভোটগ্রহণের কথা ছিল।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান এবং বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের দেওয়া আদেশে দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় সুজানগর পৌরসভার নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রুল জারি করা হয়। হাইকোর্ট গেজেটে প্রকাশিত বর্ধিত শহর এলাকার ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে সুজানগর পৌরসভার নির্বাচন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার সিদ্দিকুর রহমান এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মোখছেদ আলী রিট আবেদনে উল্লেখ করেন, ১৯৯৮ সালে সুজানগর পৌরসভা প্রতিষ্ঠাকালে সাবেক সুজানগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মথুরাপুর, নারায়ণপুর ও কৃঞ্চপুর গ্রাম অজ্ঞাত কারণে পৌরসভা থেকে দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
পরবর্তীতে সুজানগর পৌরসভার নির্বাচিত চেয়ারম্যান, মেয়র এবং রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ওই তিন এলাকার জনসাধারণ পৌরসভায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করেন। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল ওহাব পৌর মেয়র নির্বাচিত হন।
এরপর ওই তিন এলাকার মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষ তিন এলাকাকে পৌরসভায় অন্তর্ভুক্তির জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৭ এপ্রিল এবং একই বছরের ৬ আগস্ট ওই তিন এলাকা সুজানগর পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত করে সরকারি গেজেট প্রকাশিত হয়।
চূড়ান্ত সরকারি গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে নির্বাচনের দাবিতে ইতোমধ্যে এলাকাবাসী কয়েক দফা মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
এ অবস্থায় বাদীর আরজি আমলে নিয়ে তিন মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিত এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, কেবিনেট ডিভিশনের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, পাবনার জেলা প্রশাসক, সুজানগর পৌরসভার মেয়র, সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভায়না ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালন-২ অধিশাখার উপসচিব ও সহকারী সচিবের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
এদিকে আগের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২০ ডিসেম্বর দুজন মেয়র এবং ৪৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাছাই শেষে তাদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়ে। সব প্রার্থী নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন। কিন্তু ভোটগ্রহণের দুদিন আগে নির্বাচন স্থগিত করা হল।
পাবনার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পরই সুজানগর পৌরসভার নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। পৌরসভাধীন সব এলাকায় মাইকিং করে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রাকিব হাসনাত/এএম