মধ্য আফিকা প্রজাতন্ত্রে জাতিসংঘের ৩ শান্তিরক্ষী নিহত
মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কর্মরত ৩ কর্মী আততায়ী সশস্ত্র যোদ্ধাদের হামলায় নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই আফ্রিকার অপর দেশ বুরুন্ডি’র নাগরিক।
শুক্রবার মধ্যাঞ্চলীয় ডেকোয়া ও দক্ষিণাঞ্চলীয় বাকুমা এলাকায় পৃথক দুই হামলায় শান্তিরক্ষী বাহিনীর গাড়িবহরে আততায়ীদের হামলায় এই তিন কর্মী নিহত হন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কারা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে সুনির্দিষ্টভাবে তা এখনো জানা না গেলেও এর সঙ্গে দেশটির সরকারবিরোধী গোষ্ঠী সিপিসি’র সম্পর্ক রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
রোববার সংঘাতকবলিত মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার; যার মাধ্যমে নির্বাচিত প্রার্থীরা প্রেসিডেন্ট এবং আইনসভার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব নেবেন।
দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর একটি জোট সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরই পৃথক হামলায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর এসব সদস্য প্রাণ হারালেন।
বিজ্ঞাপন
জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে ঘিরে সৃষ্ট উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতেই দেশটির বিদ্রোহীগোষ্ঠী এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা তাদের।
কয়েক দশক ধরে দেশের টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সশস্ত্র সংঘাত থেকে উত্তোরণের চাবিকাঠি হিসেবে এই নির্বাচনকে দেখছে মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের জনগণ। এর মধ্যেই হামলার এমন ঘটনা ঘটল।
নির্বাচনে ১৭ জন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মধ্যে ‘ফেভারিট’ হিসেবে এগিয়ে আছেন আফ্রিকার এই দেশটির ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ফস্টিন আর্চাঙ্গা তুদেরা।
কিন্তু সম্প্রতি দেশটির সর্বোচ্চ আদালত প্রেসিডেন্ট ও আইনসভার সদস্য পদপ্রার্থীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা করায় তা পেছানোর দাবি জানিয়ে আসছিল মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের বিদ্যমান বিরোধীদলগুলোর জোট— কোয়ালিশন অব প্যাট্রিয়টস ফর চেঞ্জ (সিপিসি)।
গত ১৯ ডিসেম্বর গঠিত সিপিসি তার নেতৃত্বাধীন সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহায়তায় ইতোমধ্যে দেশের দুই-তৃীতিয়াংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। শিগগিরই রাজধানী বাঙ্গুই দখলের হুমকি দিয়ে রেখেছে তারা।
২০১৩ সালে দেশটির মুসলিম সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘সেলেকা ফাইটার্স’ এর বিদ্রোহে উৎখাত হওয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্গোইস বোজিজিকেও অযোগ্য ঘোষণা করেছিলেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
শুক্রবারের ঘটনার জন্য বোজিজি’কে দায়ী করেছে ক্ষমতাসীন সরকার।
শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের হত্যার ঘটনাকে ‘ক্যু’ হিসেবে উল্লেখ করে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশ্যে বোজিজি এবং সিপিসির যোগসাজশে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে।
তবে বোজিজি— যিনি দেশের উচ্চ আদালতে ‘অযোগ্য’ ঘোষিত হওয়ার পাশাপাশি জাতিসংঘেরও নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন— এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সূত্র: এএফপি, আলজাজিরা
এসএমডব্লিউ