বাংলাদেশে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দিল্লিতে আটক
বাংলাদেশে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত শর্বর আলি নয়াদিল্লি পুলিশের হাতে আটক
ডাকাতি, অপহরণ ও হত্যার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশের এক নাগরিককে আটক করেছে নয়াদিল্লি পুলিশ। দিল্লির খানপুর এলাকা থেকে ৪০ বছর বয়স্ক ওই ব্যক্তিকে আটক করার সময় তার কাছ থেকে দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি দেশীয় পিস্তলও উদ্ধার করা হয়েছে।
আটক মাসুম আলি ওরফে শর্বর (৪০) নামের ওই ব্যাক্তি জামিন নিয়ে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন ২০১০ সালে। এক দশক ধরে ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করে আসছিলেন তিনি। তাকে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। দিল্লির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) শিবেশ সিং বলেন, আলি বাংলাদেশে অনেক ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
শিবেশ সিং বলেন, ‘২০০৫ সালে আলি এবং তার চার সঙ্গী বাচ্চু, মনির, গাফফার ও জাকির বাংলাদেশের মধ্য নলবুনিয়া বাজার এলাকা’র একটি মোবাইল ফোনের দোকান থেকে টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করার পর দোকানমালিক জাহিদুল ইসলামকে অপহরণ করেন।
এর একদিন পর জাহিদুল ইসলামের বিকৃত লাশ খোলা মাঠে পাওয়া যায়। এ ঘটনায় আলিসহ অভিযুক্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছিল বাংলাদেশ পুলিশ।
দিল্লির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শিবেশ সিং
বিজ্ঞাপন
পরে এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়। মামলার বিচারকাজ চলার মধ্যেই ২০১০ সালে মামলার সব আসামি জামিন পায়। এরপর একই বছর শর্বর নামের একজন ভারতীয় দালালের সহযোগিতায় শর্বর এবং তার স্ত্রীর সঙ্গে দিল্লিতে পালিয়ে আসে আলি। দিল্লির সীমাপুরি এলাকায় সস্ত্রীক বাস করতো শর্বর। ভাঙ্গারি সামগ্রীর ব্যবসা ছিল তার।
আলি আসার পর তিনজন একসঙ্গে সীমাপুরিতে বসবাস করছিলেন। দিল্লিতে আসার একমাস পর শর্বর বাংলাদেশে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। এরপর থেকে আলি এবং শর্বরের স্ত্রী বিবাহিত দম্পতির মতোই বসবাস করে আসছিলেন। অল্পসময়ের ব্যবধানে আলি এবং শর্বরের স্ত্রী বেঙ্গালুরুতে চলে যান এবং শর্বরের নাম এবং আইডি ব্যবহার করে সেখানে আলি নিজেই ভাঙ্গারি ব্যবসা শুরু করে।
দিল্লির ডেপুটি কমিশনার ভিষাম সিং বলেন, ‘আলি শর্বরের নাম পরিচয় ব্যবহার করে তার স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস করছেন- এ কথা জানার পর প্রথমদিকে আমাদের দৃঢ় সন্দেহ হয়েছিল, সম্ভবত তিনি শর্বরকে খুন করেছেন। তবে আলি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
‘আমরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশকে অনুরোধ করেছি যে শর্বরের হদিস সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য যেন তার স্ত্রীকে জানানো হয় এবং কেন আলি শর্বরের নাম এবং পরিচয় ব্যবহার করছিল তা উদঘাটনে যেন এই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।’
জাহিদুল ইসলাম হত্যা মামলায় ২০১৩ সালে ফাঁসির দণ্ড দেয়া হয় আলিকে, অভিযুক্ত অপর আসামিরা বেকসুর খালাস পান। তবে ২০১০ সালে আলি ভারতে পালিয়ে যাওয়ায় তার নাগাল আর পায়নি বাংলাদেশ পুলিশ।
পুলিশের একজন তথ্যদাতার মাধ্যমে প্রথমে তারা আলি’র সম্পর্কে জানতে পারেন। এরপর থেকেই আলির মোবাইল ফোনে নজরদারি করছিলেন তারা।
দিল্লির ডেপুটি কমিশনার ভিষাম
ডেপুটি কমিশনার বলেন, ‘একটি পিস্তল এবং দুই রাউন্ড গুলিসহ আলি যখন দিল্লিতে প্রবেশ করেন; তখনই আমরা তাকে ধরতে সমর্থ হই। অস্ত্র এবং অবৈধ অভিবাসী আইনে তিনি এখন আমাদের হেফাজতে রয়েছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে ইতোমধ্যে অবহিত করা হয়েছে।’
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।
এসএমডব্লিউ/এসএস