আর্থিক ক্ষেত্রে ব্যর্থতা স্বীকার কিম জং উনের
দেশের আর্থিকখাতে উন্নয়নের জন্য নেওয়া পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। তিনি বলেন,‘২০১৬ সালে যে অর্থনৈতিক লক্ষ্য সামনে রেখে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এটা খুবই কষ্টকর এবং এর পুনরাবৃত্তি হওয়া উচিত নয়।’
মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দল ওয়ার্কার্স পার্টির কংগ্রেসে একথা বলেন দেশটির এই সর্বোচ্চ নেতা।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (৬ জানুয়ারি) দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা কেসিএনএ’র বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। পাঁচ বছর পর রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে পার্টির এই কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
কংগ্রেসে দেওয়া বক্তব্যে অবশ্য তার নেওয়া বিভিন্ন পরিকল্পনা সফল হয়েছে বলেও দাবি করেন কিম। তার দাবি,‘আমরা কেবল অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছি। এর ফলে উত্তর কোরিয়ার জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জন দীর্ঘায়িত হবে। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়।’
বিজ্ঞাপন
অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় কী ভুল ছিল, তা অবশ্য কেসিএনএ প্রকাশ করেনি। এমনকি কংগ্রেসে দক্ষিণ কোরিয়া বা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিম জং উন কোনো বক্তব্য দিয়েছেন কিনা সেটাও জানায়নি দেশটির রাষ্ট্রীয় এই বার্তাসংস্থা। বুধবারও কংগ্রেস চলছে এবং সেখানে দ্বিতীয় দফায় বক্তব্য দিতে পারেন কিম।
মঙ্গলবার পিয়ংইয়ংয়ে শুরু হওয়া দেশটির ক্ষমতাসীন পার্টির এই কংগ্রেসে সাত হাজার প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন। এই পার্টি কংগ্রেসেই আগামী পাঁচ বছরের জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনা পেশ করা হবে।
একইসঙ্গে কিম এখানে নেতৃত্বে পরিবর্তনের কথাও ঘোষণা করতে পারেন। তার বোন কিম ইয়ো জং-কে নতুন কোনো ভূমিকায় দেখা যেতে পারে। এমনকি তার হাতে বাজেট, অডিট ও সংগঠনের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলেও জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে অনুষ্ঠিত এই পার্টি কংগ্রেস থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকেও একটা বার্তা দিতে পারেন কিম। উত্তর কোরিয়ার প্রত্যাশা, ট্রাম্প যে নীতি নিয়ে চলছিলেন, বাইডেন এসে তার পরিবর্তন ঘটাবেন।
উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং উনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর থেকেই পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটনের সম্পর্কে অচলাবস্থা চলছে।
দেশটির ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির সংবাদপত্র রদোং সিনমান’এ কংগ্রেসের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু করোনা মহামারির মধ্যে অনুষ্ঠিত এই কংগ্রেসে উপস্থিত সাত হাজার প্রতিনিধির কেউই মাস্ক পরেননি বলে ছবিতে দেখা যায়।
গত বছর নিজেদের আগের পঞ্চবার্ষিকী আর্থিক পরিকল্পনা গোপনে বাতিল করে দেয় উত্তর কোরিয়া। কারণ ততোদিনে উত্তর কোরিয়ার পক্ষে আর্থিক পরিকল্পনায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে না বলে বুঝতে পারে কিম জং উন প্রশাসন।
এরপর করোনা মহামারির কারণে দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। একপর্যায়ে প্রতিবেশিদের সঙ্গে সীমান্তও বন্ধ করে দেয় দেশটি।
উত্তর কোরিয়ার দাবি, তাদের দেশে একজনও করোনা আক্রান্ত নেই। তবে দেশটির দাবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
টিএম