আয়ারল্যান্ড ব্যতীত অন্যান্য দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে যাওয়া বৈধ যাত্রীদের জন্য দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ব্রিটেন সরকার।

সরকারের এক আদেশে জারি করা নিয়মসমূহের আওতায় অনুমোদিত ভ্রমণকারীদের‍ যুক্তরাজ্যে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন যেতে হবে। তবে প্রবেশের আগে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রেও কিছু বিধি নির্দিষ্ট করা হয়েছে আদেশে।

এ বিষয়ে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজ, ফেরি বা রেলপথে ভ্রমণের সময় যাত্রীদের অবশ্যই করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট সাথে রাখতে হবে। যদি কোনো যাত্রীর সার্টিফিকেট না রাখেন বা পরীক্ষায় কোনো যাত্রীর সার্টিফিকেটের বৈধতা যদি না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে ওই যাত্রীকে স্কটল্যান্ডে ৪৮০ এবং যুক্তরাজ্যের অন্যান্য এলাকায় ৫০০ পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা গুণতে হবে।

ট্রাক ড্রাইভার এবং উড়োজাহাজ, জাহাজ ও রেলগাড়ির ক্রুদের এই বাধ্যবাধকতার বাইরে রাখা হয়েছে; কিন্তু এর বাইরে অন্যান্যরা তো বটেই, এমনকি যেসব  যাত্রী ইতোমধ্যে টিকা নিয়েছেন, তাদেরকেও যুক্তরাজ্যে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

তবে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের অ্যান্টিগা, বার্বাডোস এবং সেন্ট লুসিয়া থেকে যেসব যাত্রী ২১ জানুয়ারি ভোর চারটার মধ্যে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করবেন- তাদের জন্য কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতমূলক নয়।

করোনা সার্টিফিকেটের বৈধতার বিষয়ে সরকারি আদেশে বলা হয়েছে, পিসিআর টেস্ট সার্টিফিকেটের পাশাপাশি তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী এবং তাৎক্ষনিক ‘ল্যাম্প টেস্ট’ সার্টিফিকেটও বৈধ বলে গণ্য করা হবে।

কোনও যাত্রী যদি ব্রিটেনে আসার উদ্দেশ্যে বিমানবন্দর ত্যাগের পূর্বে টেস্ট করাতে ব্যর্থ হন, উড়োজাহাজেও তা করাতে পারবেন; তবে সেক্ষেত্রে ব্রিটেনে পৌছানোর পরপরই ৫০০ টাকা জরিমানা গোণার প্রস্তুতি রাখতে হবে তাকে।

যুক্তরাজ্যের ভ্রমণপিপাসু মানুষদের জন্য ফ্রান্স, স্পেন ও ইতালির সঙ্গে জুলাই মাসে যে ভ্রমণপথগুলো (ট্রাভেল করিডর) খোলা হয়েছিল, ইতোমধ্যে সেগুলো অস্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়েছে সরকারি আদেশে। খুব দ্রুত সেগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।

মোটকথা, ব্রিটেনে বর্তমান মহামারি পরিস্থিতিতে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে যুক্তরাজ্যে আসা লোকজনদের দেশের চলমান করোনা মহামারি পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ক্ষতিকর বলে বিবেচনা করছে দেশটির সরকার।

গত ডিসেম্বরের শেষভাগে ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই সংক্রমণ বাড়ছে দেশটিতে। সরকারি হিসেবেই বর্তমানে যুক্তরাজ্যে প্রতি ৮৫ জনে একজন সংক্রমিত।

প্রাণঘাতি এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর তালিকাতেও ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাজ্য। মহামারির শুরু থেকে বিশ্বের সব দেশ ও অঞ্চলের করোনা সংক্রমণের হালনাগাদ তথ্য সংরক্ষণ করা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৮৯ হাজার ২৬১ জন।

সূত্র: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট।

এসএমডব্লিউ