এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে চীনের একটি স্বর্ণখনিতে বিস্ফোরণের ফলে সেখানে আটকে পড়া ১২ খনিশ্রমিক এখনো বেঁচে আছেন বলে জানিয়েছে তাদের উদ্ধারে নিয়োজিত দমকল বিভাগের উদ্ধারকর্মী।

খনিতে আটকা শ্রমিকরা উদ্ধারকর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি হাতে লেখা চিরকুট পাঠাতে সমর্থ হয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম। ওই চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমাদের বাঁচানোর চেষ্টায় হাল ছেড়ো না।’

বিস্ফোরণের সময় ওই খনিতে কাজ করছিলেন ২২ জন শ্রমিক। বর্তমানে তাদের ১২ জন এখনো জীবিত থাকলেও বাকি ১০ জনের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।

গত ১০ জানুয়ারি চীনের পূর্বাঞ্চলের শানডং প্রদেশের ইয়ানতাই শহারের হুশান এলাকার একটি স্বর্ণখনিতে বিস্ফোরণের ফলে খনি থেকে নির্গমন পথ এবং বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পুর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। খনির নির্গমণ পথটি নির্মাণাধীন ছিল।

চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া ওই নির্গমণ পথ দিয়ে একটি ছোট সরু সুড়ঙ্গ করতে সমর্থ হয়েছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। সেই সুড়ঙ্গ দিয়েই দড়ির সাহায্যে শ্রমিকদের পাঠানো হচ্ছে খাদ্য, ওষুধ, কাগজ ও পেন্সিল।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০০০ ফুট গভীরে আটকে পড়া ওই শ্রমিকদের উদ্ধারে খনি এলাকার আশেপাশে বেশ কয়েকটি সুড়ঙ্গ তৈরির চেষ্টা উদ্ধারকারী কর্মীরা করছেন বলে জানিয়েছেন চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম।

খনিতে বিস্ফোরণের পর তা প্রাদেশিক এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাতে ৩০ ঘন্টারও বেশি সময় বিলম্ব করায় ইতোমধ্যে কমিউনিস্ট পার্টি ইয়ানতাই শাখার সেক্রেটারি এবং শহরটির মেয়রকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে চীন সরকার। দমকলকর্মীরা জানিয়েছেন, তাৎক্ষনিক ভাবে কাজ শুরু করা হলে এতক্ষণে উদ্ধারকাজ অনেকটা এগিয়ে থাকত।

চীনে খনি দুর্ঘটনা খুব অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয় এবং এ বিষয়ে নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রেও উদাসীন দেশটির সরকার। গতবছর ডিসেম্বরে চীনের একটি কয়লাখনিতে বিষাক্ত গ্যাস কার্বন মনোক্সাইডের নিঃসরণের ফলে ২৩ খনি শ্রমিক মারা গিয়েছিলেন। এর তিন মাস আগে সেপ্টেম্বরে একই কারণে অপর একটি কয়লা খনিতে মারা গিয়েছিলেন ১৬ জন শ্রমিক।

এর আগের বছর ২০১৯ সালে জীনের গুইঝৌ রাজ্যের একটি কয়লাখনিতে বিস্ফোরণের কারণে মারা গিয়েছিলেন ১৪ জন শ্রমিক।

সূত্র: বিবিসি।

এসএমডব্লিউ