মিজানুর রহমান ওরফে নীল

অনলাইনে পরিচয়। সেই সুবাদে এক কোটি ২৫ লাখ টাকা ধার দিয়েছেন দুই বান্ধবীকে। টাকা ফেরত না পেয়ে অভিমানে লাইভে এসে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন মিজানুর রহমান ওরফে নীল (২৪) নামে এক প্রবাসী। 

নিহত মিজানুর চট্টগ্রামের বাঁশখালি উপজেলার পূর্ব কাহারঘোনার হাজি সিদ্দীক আহমেদের ছেলে। তিনি আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকে থাকতেন। গত ১০ মার্চ সকাল এগারোটায় দেশটির তেতে প্রদেশে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিজানুর। তাকে মোজাম্বিকে দাফন করা হয়েছে। 

মোজাম্বিক থেকে মিজানুরের বড় ভাই মুহাম্মদ ওমর কাজী বলেন, আমরা চার ভাই মোজাম্বিকের বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসা করি। ২০১৪ সালে ছোট ভাই মিজানকে মোজাম্বিকে আনি। এরপর থেকে ব্যবসার হিসাব-নিকাশ, টাকা-পয়সা মিজানের কাছে ছিল। তাকে আমরা সবাই আদর করতাম। টাকা গেছে সেটা বিষয় না। কিন্তু ভাই হারানোর বেদনা সহ্য করা যায় না। 

ভাইদের অভিযোগ, লাইকি অ্যাপের সূত্রে চট্টগ্রাম হালিশহর এলাকার কলেজছাত্রী ফৌজিয়া আনোয়ারের (২২) সঙ্গে মিজানুরের পরিচয়। এরপর পতেঙ্গার পার্লার ব্যবসায়ী ঐশী মির্জার (২১) সঙ্গেও অনলাইনে সম্পর্ক গড়ে ওঠে মিজানুরের। বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় ফৌজিয়া ও ঐশীকে টাকা ধার দেন মিজান। কিন্তু টাকা ফেরত চাইলে সম্পর্কের অবনতি হয়। এ ঘটনায় ঐশীকে লাইকিতে লাইভে রেখে কীটনাশক (ইঁদুরের বিষ) খান মিজানুর। মোজাম্বিকের একটি  হাসপাতালে নেওয়ার দশ মিনিট পর মৃত্যু হয় মিজানুরের। 

এ বিষয়ে ঐশী মির্জার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফৌজিয়া আনোয়ারের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে পরিচয় গোপন করার চেষ্টা করেন। পরে এ বিষয়ে কিছু বলতে হলে আদালতে বলবেন বলে জানান।

মিজানুরের ভাই ওমর কাজী বলেন, কী পরিমাণ টাকা লেনদেন হয়েছে এখনই সঠিক বলতে পারছি না। টাকার পরিমাণ নিশ্চিত হতে মোজাম্বিক পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে ব্যাংক হিসাব তদন্ত করা হবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, প্রায় এক কোটি ২৫ লাখ টাকা মিজানুর ধার দিয়েছে। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত দুই তরুণীকে আইনের আওতায় আনতে বাংলাদেশ ও মোজাম্বিক থেকে কাজ চলছে বলে জানান ওমর। মিজানুরের মোবাইল ফোন ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।

এইচকে